প্রতীকী ছবি।
ফের গভীর খাদে গাড়ি ব্যবসা!
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে রাজ্যভিত্তিক বিধিনিষেধ এবং লকডাউনের জেরে গত এপ্রিলেই শোরুম থেকে গাড়ি বিক্রি ভাল রকম ধাক্কা খেয়েছিল। মে মাসে সেই বিক্রি আরও কমল। সরকারি বাহন পোর্টালের তথ্য উদ্ধৃত করে গাড়ি ডিলারদের সংগঠন ফাডা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে সার্বিক ভাবে শোরুম থেকে বিক্রি কমেছে প্রায় ৫৫%। তাদের দাবি, অধিকাংশ ডিলারেরই ব্যবসা তলানিতে পৌঁছনোয় ঋণের কিস্তি শোধ করা তাঁদের পক্ষে এখন কার্যত অসম্ভব। সেই সঙ্কট কাটাতে ঋণ পুনর্গঠনের বদলে ৯০ দিন পর্যন্ত ধার শোধ স্থগিত রাখার সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আর্জি জানিয়েছে সংগঠনটি।
এক বছর আগের নির্দিষ্ট সময়ের সঙ্গে তুলনা টেনে ব্যবসার পরিস্থিতি বিশ্লেষণই গাড়ি শিল্পের প্রচলিত রীতি। কিন্তু ২০২০ সালের মে মাসে দেশব্যাপী লকডাউন থাকায়, এ বছরের মে মাসের সঙ্গে তার তুলনা টানা সম্ভব নয়। সে কারণে ২০১৯ সালের মে মাসের বিক্রির পরিস্থিতির সঙ্গে সেই তুলনার চেষ্টা করেছে ফাডা। সেই হিসেবে সার্বিক ভাবে গাড়ি বিক্রি কমেছে প্রায় ৭০%। এমনকি তা অনেকটা কমেছে এপ্রিলের তুলনাতেও। যখন করোনার দ্বিতীয় সংক্রমণ পুরোদস্তুর রয়েছে দেশে। ডিলারদের বক্তব্য, দেড় বছরের বেশি সময় ধরেই ক্রমশ গাড়ি ব্যবসার হাল খারাপ হচ্ছে। করোনা তাকে ঠেলে দিয়েছে আরও গভীর খাদে। এই অবস্থায় গাড়ির ব্যবসা ফের কবে করোনার আগের জায়গায় পৌঁছতে পারবে তা বলা খুব কঠিন। এই অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি, ডিলারদের সাহায্য করুক গাড়ি সংস্থাগুলিও।
ফাডার প্রেসিডেন্ট ভিঙ্কেশ গুলাটি এ দিন বলেন, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ধাক্কা দিয়েছে সর্বত্র। শহরের পাশাপাশি এ বারে বিপর্যয় এসেছে গ্রামীণ এলাকাতেও। গাড়ি সংস্থাগুলির কাছ থেকে ডিলারদের সাহায্য অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ঋণ শোধ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখারও আর্জি জানিয়েছে ফাডা।’’
সরকার এবং ফাডার হিসেবে, ২০১৯ ও ২০২১ সালের এপ্রিলে যাত্রিবাহী গাড়ির বিক্রি ২ লক্ষ পেরিয়েছিল। গত মাসে তা ৮৬ হাজারের নীচে নেমেছে। গত এপ্রিলে ৮.৬৫ লক্ষ দু’চাকার গাড়ির বিক্রি হলেও মে-তে তা মাত্র চার লক্ষ পার করতে পেরেছে। ২০১৯ সালের এপ্রিলে তা ছিল ১৩ লক্ষেরও বেশি। আর যে বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি অর্থনীতির অন্যতম মাপকাঠি, গত মাসে তা বিক্রি হয়েছে মেরেকেটে ১৭ হাজার। এপ্রিলে তার তিন গুণ বেশি গাড়ি বিক্রি হয়েছিল।
তবে একই সঙ্গে ফাডা জানিয়েছে, সম্প্রতি ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা উঠতে শুরু করায় মে মাসের জমে থাকা চাহিদার কিছুটা জুনের প্রথম ন’দিনে ক্রেতারা পূরণ করেছেন। পাশাপাশি, বর্ষা প্রায় সর্বত্র পৌঁছে যাওয়ায় গ্রামীণ এলাকার আর্থিক উন্নতির হাত ধরে গাড়ি বাজারের পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলাবে বলে আশা তাদের।