—প্রতীকী চিত্র।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ভারতীয় অর্থনীতির চাকায় গতি এসেছে বটে, তবে নিচু আয়ের মানুষের আর্থিক অবস্থা যে বিশেষ ফেরেনি তা স্পষ্ট বিভিন্ন সমীক্ষায়। এ বার মূল্যায়ন সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের মুখ্য অর্থনীতিবিদ দেবেন্দ্র কুমার পন্থ জানালেন, কম আয়ের মানুষের উপরে মূল্যবৃদ্ধির বিরূপ প্রভাবই এখন অর্থনীতির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৭.২%। সরকারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে তা হতে পারে ৭.৩%। পন্থ আজ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিঘ্নিত বর্ষা ও বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দরের প্রভাব সামলে অর্থনীতি এখন যথেষ্ট প্রাণবন্ত। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির হার কমাতে না পারলে জীবনধারণের ব্যয়ের পরে অতিরিক্ত খরচ করার মতো টাকা মানুষের হাতে থাকবে না।
পন্থের ব্যাখ্যা, আয়ের দিক থেকে দেশের মধ্যেই দু’টি ভারত রয়েছে। নীচের স্তরের মানুষের মজুরি বৃদ্ধির হার উপরের স্তরের বা সংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের আয় বৃদ্ধির হারের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না। তিনি বলেন, ‘‘সমীক্ষায় দেখেছি আয়ের নিরিখে উপরের ৫০% মানুষকে যে মূল্যবৃদ্ধি যুঝতে হয়, নীচের ৫০% মানুষকে যুঝতে হয় তার চেয়ে বেশি। কম আয়ের মানুষ যে সব পণ্য ও পরিষেবা ব্যবহার করেন সেগুলির দাম তুলনায় দ্রুত বাড়ছে।’’ উল্লেখ্য, দু’মাস ৫ শতাংশের নীচে থাকার পরে নভেম্বরে দেশের খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ফের লাফিয়ে ৫.৫৫% ছুঁয়েছে। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সতর্কবার্তা দিচ্ছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক।
এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ বলছেন, মূল্যবৃদ্ধি ১ শতাংশ বিন্দু কমলে জিডিপি ৬৪ বেসিস পয়েন্ট বাড়তে পারে। ব্যক্তিগত খরচ বাড়তে পারে ১.১২ শতাংশ বিন্দু। পন্থের সতর্কবার্তা, অর্থনীতির গতি এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের ব্যয়ের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু বছরের পর বছর এমন চললে রাজকোষ ঘাটতি এবং ঋণ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বাড়তে পারে সুদও। বেসরকারি লগ্নিতে গতি এলে ও কেন্দ্র খরচ কমালে বৃদ্ধিতে ভারসাম্য আসবে।