টেলিকম শিল্পে ফিরে আসছে মুকেশ অম্বাণী (বাঁ দিকে) ও সুনীল মিত্তালের লড়াই। —ফাইল চিত্র
টেলিকম শিল্পের বাজারে কার্যত রিল্যায়েন্স জিয়ো জিয়ো-র একচেটিয়া বাজার। সেখান থেকে কি এ বার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পরিস্থিতি? প্রতিযোগী হয়ে উঠছে ভারতী-এয়ারটেল? শেয়ার বাজার এবং বিনিয়োগের খবরের পর ইঙ্গিত তেমনটাই। এ বছর টেলিকম ক্ষেত্রে শেয়ার বাজারে সেরা পারফরমার এয়ারটেল। তার উপর সংস্থায় অ্যামাজন বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে বলে একটি সংবাদ সংস্থার খবর। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, এয়ারটেলে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার পক্ষে এই দুই খবরই যথেষ্ট।
সস্তায় ফোর জি ইন্টারনেট ও বিনামূল্যে কলের সুবিধা নিয়ে বাজারে আসার পর থেকেই টেলিকম জগতে কার্যত বিপ্লব এনে দিয়েছিল মুকেশ অম্বাণীর সংস্থা রিল্যায়েন্স জিয়ো। তার পর থেকে বহু সংস্থা হয় অন্য সংস্থার সঙ্গে সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে টিকে থাকার চেষ্টা করেছে, নয়তো পরিষেবার খরচ কমানোর প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ব্যবসা গোটাতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত টিকে রয়েছে মাত্র তিনটি সংস্থা— জিয়ো, ভোডাফোন-আইডিয়া এবং ভারতী এয়ারটেল। কিন্তু জিয়ো ছাড়া দুই সংস্থারই ট্রাইয়ের কাছে বিপুল বকেয়া।
এমন পরিস্থিতিতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় এয়ারটেল। এ বছর এয়ারটেলের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৬ শতাংশ। ১৯ মে শেয়ারের দাম পৌঁছে গিয়েছিল রেকর্ড উচ্চতায়। আবার রয়টার্স একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছিল যে, এয়ারটেলে প্রায় ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে পারে অ্যামাজন। তার পর বৃহস্পতিবার ফের লাফিয়ে বাড়ে ভারতী এয়ারটেলের শেয়ারের দাম।
আরও পড়ুন: পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে ১৫ দিন সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট
অথচ গত আর্থিক বছরেও বিপুল লোকসানের মুখ দেখেছিল সুনীল মিত্তালের সংস্থা ভারতী এয়ারটেল। তার উপর ছিল সরকারের বিপুল দেনা মেটানোর চাপ। কিন্তু সেখান থেকে অ্যামাজনের বিনিয়োগ এবং শেয়ার বাজারে সেরা পারফরমার হওয়ার পর স্বস্তির হাওয়া এয়ারটেলে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে জিয়োর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিতে পারবে এয়ারটেল। সুবিধা হবে সরকারের দেনা মেটানোর ক্ষেত্রেও। মুম্বইয়ের বিনিয়োগ সংক্রান্ত পরামর্শদাতা সংস্থা ক্রিস-এর ডিরেক্টর অরুণ কেজরীবালের মতে, ‘‘অনেকেই মনে করেছিলেন, জিয়োর সঙ্গে প্রতিযোগিতার ধাক্কা কাটাতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু তারা বাজার থেকে দ্রুত টাকা তুলে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাই এক বছর কোনও নতুন প্রকল্প নয়, জানাল অর্থমন্ত্রক
২০১৬ সালে জিয়ো আসার আগে পর্যন্ত ভারতীয় টেলিকম শিল্পে নম্বর ওয়ান ছিল এয়ারটেল। কিন্তু জিয়ো আসার পর থেকেই তার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গ্রাহকদের বিপুল ছাড় দিতে হয়েছিল। সেখান থেকে এই ঘুরে দাঁড়ানো ভারতীয় টেলিকম শিল্পের বাজারের পক্ষে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ, গত কয়েক বছর যে জিয়ো-র একচেটিয়া বাজার চলছিল, সেখান থেকে দু’টি সংস্থার মধ্যে প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, যা গ্রাহকদের দিক থেকে দেখলেও সুবিধাজনক।