—প্রতীকী চিত্র।
যে আই ফোন বিক্রির জন্য আমেরিকার প্রযুক্তি সংস্থা অ্যাপল ভারতকে অন্যতম নিশানা করে এগোচ্ছে, এ বার তার সঙ্গে জুড়ে গেল টাটাদের নাম। এই প্রথম কোনও ভারতীয় শিল্প গোষ্ঠী হিসেবে এ দেশে ওই ফোন তৈরি করবে টাটারা। কারণ তাইওয়ানের উইস্ট্রন-এর ভারতীয় শাখাকে কিনে নিচ্ছে তারা। চুক্তির ভিত্তিতে এ দেশে যন্ত্রাংশ জুড়ে অ্যাপল যে তিন সংস্থার মাধ্যমে আই ফোন তৈরি করে, তাদের অন্যতম উইস্ট্রন ইনফোকম ম্যানুফ্যাকচারিং (ইন্ডিয়া)।
উইস্ট্রন জানিয়েছে, তাদের পরিচালন পর্ষদ বেঙ্গালুরুর কাছে অবস্থিত কারখানাটির ১০০% টাটা ইলেকট্রনিক্স-কে বিক্রি করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। এখানে কর্মী সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। সম্ভাব্য লেনদেন মূল্য প্রায় ১০,৪০৮ কোটি টাকা (১২.৫০ কোটি ডলার)।
আমেরিকা-চিনের বিরোধ, করোনা সংক্রমণ ইত্যাদির জেরে আই ফোন নির্মাণের ক্ষেত্রে চিনের উপর নির্ভরশীলতা নিয়ে সমস্যা পড়েছিল অ্যাপল। সে দেশে কম খরচে কর্মী নেওয়ার যে সুবিধা মিলত, মজুরি বৃদ্ধির জেরে তা-ও কমে। ফলে বেশ ক’বছর ধরেই আই ফোন তৈরির নতুন গন্তব্য খুঁজছিল আমেরিকার প্রযুক্তি সংস্থাটি। গত এপ্রিলে ভারতে প্রথম বার অ্যাপল নিজস্ব বিপণি খোলে। মে মাসে সংস্থার সিইও টিম কুক জানান, এ দেশের সম্ভাবনাময় বাজারকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন তাঁরা।
এ বছর বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা ভোট। আগামী বছর রয়েছে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে প্রত্যাশিত ভাবেই এই হাতবদলকে নিজেদের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টায় কসুর করতে নারাজ মোদী সরকার। এক্সে এই খবর জানিয়ে বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি
প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরের দাবি, স্মার্ট ফোন তৈরি ক্ষেত্রে কেন্দ্রের উৎপাদন ভিত্তিক আর্থিক উৎসাহ প্রকল্প ইতিমধ্যেই সফল হয়েছে। এ বার টাটারা দেশ-বিদেশের বাজারের জন্য আই ফোন তৈরি করবে।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, ভারতে শুধু যন্ত্রাংশ জোড়া হয়। শিল্পের পরিভাষায় ‘অ্যাসেম্বল’। একে পুরোদস্তুর আই ফোন তৈরির কর্মযজ্ঞ বলা যাবে না। কারণ, যন্ত্রাংশ তৈরির জোগান শৃঙ্খল সে ভাবে গড়ে ওঠেনি। বৈদ্যুতিন শিল্পে লগ্নির গন্তব্য হিসেবে ভারতকে গড়ে তুলতে সব সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন রাজীব।
অ্যাপলের সঙ্গে চুক্তি করে ২০১৭ সালে বেঙ্গালুরুতে যন্ত্রাংশ জুড়ে আই ফোন নির্মাণের কারখানা তৈরি করে উইস্ট্রন। তাইওয়ানের আরও দুই সংস্থা ফক্সকন এবং পেগাট্রনের সঙ্গেও একই চুক্তি হয়। তবে বছর তিনেক আগে মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে উইস্ট্রনের কারখানাটি প্রায় তিন মাস বন্ধ ছিল। এটিই যাচ্ছে টাটাদের হাতে।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই হাত বদলের জল্পনা চলছে বছর খানেক ধরে। এ দিন তাতে সিলমোহর পড়ল। দু’পক্ষের চুক্তি সম্পূর্ণ হলে সায়ের জন্য আবেদন করা হবে।