ফাইল চিত্র।
টেলিকম দফতরের (ডট) হিসেব মেনে আয়ের (এজিআর) ভিত্তিতে বকেয়া স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি মেটানোর মামলায় ফের সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়ল কেন্দ্র ও টেলি সংস্থাগুলি। ডটের হিসেবের সঙ্গে সংস্থাগুলির স্বেচ্ছা-মূল্যায়নের ফারাক নিয়ে ভর্ৎসনা করে সোমবার শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, এজিআরের সংজ্ঞা ও ওই হিসেবের পুনর্বিবেচনা হবে না। তবে সংস্থাগুলির ২০ বছর ধরে কিস্তিতে বকেয়া মেটানোর আর্জির বাস্তবতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও, সে বিষয়ে রায়দান স্থগিত রেখেছে তারা। বলেছে, দেউলিয়া সংস্থাগুলির বিষয়ে ১০ অগস্ট ফের শুনানি হবে।
সংস্থাগুলির দাবি ছিল, ডটের হিসেবে বকেয়া স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি-র অঙ্ক ঠিক নয়। স্বেচ্ছা-মূল্যায়নের ভিত্তিতে আংশিক বকেয়া মেটায় ভোডাফোন আইডিয়া, এয়ারটেল ও টাটা টেলিসার্ভিসেস। দাবি করে, পুরোটা একসঙ্গে দেওয়া সম্ভব নয়। সংস্থা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাও জানায় ভোডাফোন। সুপ্রিম কোর্টের কাছে ২০ বছর ধরে কিস্তিতে বকেয়া মেটানোর সুযোগ দেওয়ার আর্জি জানায় কেন্দ্র। তবে বাকিরা হয় পুরোটাই (রিলায়্যান্স জিয়ো) দিয়েছে, নয়তো দেউলিয়া (রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্স, এয়ারসেল) হয়েছে।
ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত
• এক সেকেন্ডও বকেয়া স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি-র হিসেব নিয়ে টেলি সংস্থাগুলির স্বেচ্ছা-মূল্যায়ন বরদাস্ত হবে না।
• ডটের বকেয়া হিসেবের পদ্ধতি ও চূড়ান্ত অঙ্ককেই (প্রায় ১.৬ লক্ষ কোটি টাকা) মান্যতা দেওয়া হবে।
• সংস্থাগুলি পুনর্বিবেচনা ও নতুন করে হিসেবের নামে দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে, যা মানা হবে না।
• সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না-মানলে চড়া খেসারত দিতে হবে সংস্থাগুলিকে।
• ১৫-২০ বছর ধরে ধাপে ধাপে বকেয়া মেটানোর সময়সীমা অযৌক্তিক।
• এয়ারটেল, ভোডাফোন আইডিয়াকে যুক্তিগ্রাহ্য সময় জানাতে হবে।
• জমা দিতে হবে গত ১০ বছরের ব্যবসার হিসেবও।
• বকেয়া মেটানোর সময়সীমা নিয়ে রায় স্থগিত রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।
• ১০ অগস্ট পরের শুনানিতে দেউলিয়া, ব্যবসা গোটানো সংস্থাগুলি নিয়ে কথা হবে। যাদের মধ্যে রয়েছে রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্স, সিস্টেমা, এয়ারসেল, ভিডিয়োকন ইত্যাদি।
সংস্থাগুলির দাবি
• হিসেবের পর্যালোচনা চাইছে না তারা।
• এয়ারটেল ও ভোডাফোন আইডিয়ার দাবি, ১৫ বছর সময় দেওয়া হোক বকেয়া মেটানোর জন্য। টাটা টেলি চায় ৭-১০ বছর।
আজ সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ‘‘...এজিআরের সংজ্ঞা আমরা ঠিক করেছি। তার ভিত্তিতে ডট বকেয়া চেয়েছে। তা নিয়ে আর কথা হবে না।’’ সঙ্গে তাদের বক্তব্য, ১৫-২০ বছর সময় বাস্তবোচিত নয়। তবে বলা হচ্ছে না এখনই সব টাকা দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে।
সংস্থাগুলিকে যথাযথ সময় জানাতে হবে। এর মধ্যে কেউ ব্যবসা গোটালে বা দেউলিয়া হলে কী ভাবে বকেয়া আদায় হবে, তা-ও জানতে চায় কেন্দ্রের কাছে। পাশাপাশি, বকেয়া থেকে রেহাই পেতেই কিছু সংস্থা দেউলিয়া ঘোষণা করছে কি না, তা খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট।