—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লাইসেন্স ও স্পেকট্রাম ফি (অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভেনিউ বা এজিআর) বাবদ বকেয়া এবং সুদ, জরিমানা ও জরিমানার উপরে সুদ মিলিয়ে টেলিকম দফতরের (ডট) কাছে ১.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া তৈরি হয়েছে বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলির। এই বকেয়ার যে হিসাব ডট কষেছে, তা সংশোধনের জন্য সুপ্রিম কোর্টে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছিল তারা। কিন্তু বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ তা খারিজ করে দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এই বকেয়ার মধ্যে ভোডাফোন আইডিয়ার (ভি) ঘাড়ে চেপে রয়েছে ৭০,৩২০ কোটি। অথচ তাদের আর্থিক স্বাস্থ্যই সবচেয়ে খারাপ। ফলে সংস্থাটির অস্তিত্বের সামনে কার্যত প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হল। এ দিন আদালতের রায়ের পরে তাদের শেয়ার দর প্রায় ২০% পড়ে যায়। ইন্দাস টাওয়ারসের শেয়ার দরও পড়েছে। একটি অংশ বলছে, সামগ্রিক ভাবে দেশের টেলিকম ক্ষেত্রেরই আর্থিক অবস্থা তেমন সুবিধার নয়। অধিগ্রহণ এবং সংযুক্তিকরণের পরে বেসরকারি টেলিকম পরিষেবা সংস্থার সংখ্যা কমে তিনে ঠেকেছে।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট এই সংক্রান্ত রায়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ডটের হিসাব ত্রুটিহীন। বকেয়া থেকে সুরাহার কোনও সম্ভাবনা নেই। এই সংক্রান্ত আর কোনও আর্জি তারা শুনবে না। তাতে সবচেয়ে সমস্যায় পড়ে ভি এবং ভারতী এয়ারটেল। রিলায়্যান্স জিয়োর বকেয়া ছিল কম। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে অন্য এক রায়ে শীর্ষ আদালত জানায়, ২০৩১ সাল পর্যন্ত ১০টি কিস্তিতে তা জমা করতে পারবে সংস্থাগুলি। তবে বকেয়ার ১০% আগাম জমা দিতে হবে। গত বছর শেষ আবেদনটিতে টেলিকম পরিষেবা সংস্থাগুলি বলে, তারা লাইসেন্স ফি নিয়ে কোনও চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে না। বকেয়ার হিসাবের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাচ্ছে। ভি-এর আর্জির মধ্যে ছিল এজিআরের হিসাবের পুনর্বিবেচনা, জরিমানা কমানো এবং সেই অনুযায়ী সুদের নতুন করে হিসাব কষা।
টেলিকম ক্ষেত্রের ব্যাখ্যা, ভি এই বিপুল অঙ্কের টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবে তা স্পষ্ট নয়। কিস্তিতে তা মেটাতে হবে বটে, তবে সেটাও তাদের পক্ষে সহজ নয়। এয়ারটেলের বকেয়া রয়েছে প্রায় ৪৪,০০০ কোটি টাকা। তালিকায় রয়েছে ইন্দাস টাওয়ারস। এই প্রসঙ্গে আর্থিক সংস্থা আইআইএফএলের পক্ষে বালাজি সুব্রহ্মণ্যন বলেন, ‘‘এই নির্দেশ অনেকাংশেই প্রত্যাশিত। যদি ছাড় পাওয়া যেত তা হলে ভি-এর জন্য ভাল হত। তাদের নগদের যা হাল, তাতে এই বকেয়া মেটানো অত্যন্ত কঠিন। এর ফলে তাদের ৫জি পরিষেবা চালু হওয়া আরও পিছিয়ে যেতে পারে।”