গরম বাড়ছে রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে প্রায় মাস খানেকের খরা কাটিয়ে উৎপাদনের হাল ফিরল পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমে। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে প্রতিদিন টানা ৩,০০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে সংস্থা। কয়লার জোগানে সঙ্কট কিছুটা কাটার হাত ধরেই চাঙ্গা হচ্ছে উৎপাদন, দাবি সংশ্লিষ্ট শিল্পের।
আর, এর জেরেই কিছুটা স্বস্তিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। কারণ গত কয়েক মাস ধরেই নিগমের কয়লা সঙ্কটের কারণে বাজার থেকে চড়া দামে তাদের বিদ্যুৎ কিনতে হয়েছে। যা নিয়ে চিন্তায় ছিল নবান্নও। কারণ সেই বোঝা শেষ পর্যন্ত চাপবে গ্রাহক মাসুলেই। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘জ্বালানি সঙ্কট কিছুটা মিটেছে কোল ইন্ডিয়ার কয়লার জন্যই। আগের তুলনায় জোগান বাড়ায় উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা, আপাতত চাহিদা মতো বিদ্যুৎ মিলবে।’’
পুজোর পর থেকেই রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে ব্যাপক জ্বালানি সঙ্কট চলছিল। এখনও তা পুরো কাটিয়ে ওঠা যায়নি। কিন্তু তুলনায় কয়লার জোগান কিছুটা বেড়েছে বলেই রাজ্যের বিদ্যুৎ-কর্তারা জানাচ্ছেন। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে সবক’টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র মিলিয়ে গড়ে ৩০-৪৫ দিনের কয়লা মজুত আছে। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতেও ১৮-২০ দিনের বেশি থাকত না। সেই হিসেবে জোগান দ্বিগুণ হয়েছে।
সঙ্কটমোচন
• গড়ে সবক’টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মোট মজুত কয়লা ৩৫-৪০ দিনের
• আগে তা ছিল ১৫-২০ দিন
• বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াল দিনে ৩,০০০ মেগাওয়াট
• কয়েক মাসের গড় ২,২০০-২,৪০০ মেগাওয়াট
• জ্বালানি পাওয়ায় বক্রেশ্বর ও সাঁওতালডিহির উৎপাদন জোরকদমে
• সাগরদিঘিতে অল্প হলেও রোজ মিলছে কয়লা
সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির তথ্য অনুযায়ী বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে গড়ে ১৮ দিনের কয়লা মজুত থাকছে। ভাল জ্বালানি মজুত ব্যান্ডেল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেও। সঙ্কটে থাকলেও গড়ে ৩-৪ দিনের জ্বালানি থাকছে সাগারদিঘি ও সাঁওতালডিহি কেন্দ্রে।
নিগম সূত্রে খবর, ২২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি রাজ্যের চাহিদা মেটাতে ৩,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। তারপর থেকে টানা একই ক্ষমতায় চাহিদা মিটিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি নিগমের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে বণ্টন সংস্থা ৩,৩১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছে। ওই দিন রাজ্যে (সিইএসসি এলাকা বাদে) বিদ্যুতের চাহিদা ছিল প্রায় ৫,৩০০ মেগাওয়াট। মার্চের প্রথম কয়েক দিনেও নিগমের উৎপাদন ভালই।
বর্ষা থেকেই কোল ইন্ডিয়া থেকে কম কয়লা পাচ্ছিল নিগম। তাদের নিজস্ব খনিগুলিও বন্ধ থাকায় কয়লা তোলা যাচ্ছিল না। ওই সময় থেকেই নিগম-কর্তারা দিল্লিতে কয়লা মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে জোগান বাড়াতে দরবার করেছেন।