দুর্বল হয়ে প়ড়া ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কেন্দ্রের কাছ থেকে ৮৫৮৬ কোটি টাকার মূলধন পাওয়ার পথ তৈরি করতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি সই করল সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলি। এর মধ্যে কলকাতায় সদর দফতর থাকা তিনটি ব্যাঙ্কই রয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে ব্যাঙ্কগুলির ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরকে ঘিরে। কারণ, তার আওতায় রয়েছে কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা ছাঁটাই করা এবং কিছু শাখা বন্ধ করার মতো শর্ত।
মঙ্গলবার সই হওয়া এই সমঝোতাপত্র বা মউ আদতে প্রাথমিক চুক্তি বলে জানিয়েছেন ইউনিয়ন নেতারা। এর পর সই হওয়ার কথা ব্যাঙ্কের ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত চুক্তিটি। যাকে ঘিরেই চলছে টানাপড়েন। কারণ, ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (বেফি)-র সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘‘প্রাথমিক চুক্তি সই করেছি ঠিকই। তবে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি, ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনায় যদি কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা ছাঁটাই বা শাখা বন্ধ করার মতো শর্ত থাকে, তা হলে সেই চুক্তিতে সই করব না।’’ প্রসঙ্গত, কেন্দ্র ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক চাঙ্গার পরিকল্পনা সফল করার ব্যাপারে কর্মী-অফিসারদের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। আর ওই পরিকল্পনার অন্যতম দুই শর্ত, প্রয়োজনে ছাঁটা হবে কর্মী-অফিসারদের কিছু সুযোগ-সুবিধা ও বন্ধ করা হবে লোকসানে চলা শাখা। এআইবিইএ সভাপতি রাজেন নাগর অবশ্য বলেছিলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক বাঁচাতে সব রকম সাহায্য করব। চুক্তি করতেও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে চলব।’’ কিন্তু এ বার উল্টো পথে হেঁটে বেফি শর্ত মানবে না বলে জানানোয় ব্যাঙ্কের মূলধন পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেই। কারণ, কেন্দ্র জানিয়েছে, যে-সব ব্যাঙ্কে এই মর্মে কর্মী-কর্তৃপক্ষের মধ্যে চুক্তি সই হবে, তারাই পাবে মূলধন।
এ দিন এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সরকার বলেন, ‘‘যে প্রাথমিক চুক্তি সই করলাম, তাতেই বলা হয়েছে, ব্যাঙ্ক চাঙ্গা করার পরিকল্পনা ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার পরেই হাতে নেওয়া হবে।’’ উল্লেখ্য, এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের ৪১৮ কোটি টাকা মূলধন পাওয়ার কথা। একই বক্তব্য ইউকো ব্যাঙ্ক অফিসার্স ইউনিয়নের নেতা পার্থ চন্দেরও। ইউকো-র পাওয়ার কথা ১১৫০ কোটি টাকা।