প্রতীকী চিত্র।
টানা ১০ দিন ধরে উত্থান। এ সপ্তাহের গোড়ায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ও রাজ্যগুলির জন্য সরকার কিছু আর্থিক দাওয়াই ঘোষণার পরে যখন তা অর্থনীতির সঙ্কট সামলানোর পক্ষে নগণ্য বলে ছুড়ে ফেলেছিলেন লগ্নিকারী ও বিশেষজ্ঞেরা, তখনও শেয়ার বাজার পড়েনি। তবে নামমাত্র ওঠে। তার পরেই বৃহস্পতিবার ১০৬৬ পয়েন্টের ধস সেনসেক্সে। এক দিনে উধাও লগ্নিকারীদের ৩.২৫ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ।
বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য বলছেন, তেমন কারণ ছাড়াই, স্রেফ অর্থনীতির উন্নতির আশায় সেনসেক্স সাড়ে ৪০ হাজার পেরনোয় সংশোধন ছিল সময়ের অপেক্ষা। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার কাঁটা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ও ফের লকডাউন, বিশ্ব জুড়ে শেয়ারের পতন, দেশে সরকারি আর্থিক সাহায্য নিয়ে আশাভঙ্গ, সংক্রমণ বৃদ্ধি তাতেই ইন্ধন জুগিয়েছে। তবে সেনসেক্সের ৩৯,৭২৮.৪১ অঙ্কও যথেষ্ট উঁচু।
সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও আইএমএফ-ও ভারতের অর্থনীতির অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার বার্তা দিয়েছে। দেকো সিকিউরিটিজ়ের কর্ণধার অজিত দে বলেন, ‘‘আতঙ্কিত লগ্নিকারীরা অনিশ্চিত বাজারে শেয়ার বেচে মুনাফা তুলেছেন। তাই ধস।’’
আরও পড়ুন: আদর্শ টার্ম পলিসি চালু করতে নির্দেশ
আরও পড়ুন: মুনাফা বাড়লেও বিলগ্নির তালিকায় বেঙ্গল কেমিক্যালস!
তবে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখের দাবি, ‘‘এটা সংশোধন। গত ছ’মাসে প্রায় কোনও সংশোধন ছাড়াই সূচক বিপুল উঠেছে। বাজারের মৌলিক উপাদানগুলি সহায়ক না-থাকা সত্ত্বেও। সূচক আরও পড়বে।’’
এক ঝলকে
•গত ১০ দিন টানা সেনসেক্স উঠেছিল প্রায় ২৮৫৮ পয়েন্ট।
•বৃহস্পতিবার এক ধাক্কায় পড়ল ১০৬৬ পয়েন্ট বা ২.৬১%। দাঁড়াল ৩৯,৭২৮.৪১ অঙ্কে।
•বাজার থেকে মুছল লগ্নিকারীদের ৩.২৫ লক্ষ কোটি টাকা।
উদ্বেগের কারণ
চাহিদা বাড়িয়ে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে সরকারের থেকে বড় মাপের আর্থিক দাওয়াই আশা করেছিল বাজার। সেই আশা ভেঙেছে।
•অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কা বাড়িয়েছে সংক্রমণ বৃদ্ধি।
•সেনসেক্স সাড়ে ৪০ হাজার পেরনোয় মুনাফা তুলেছেন লগ্নিকারীরা।
•আমেরিকায় এখনই আর্থিক দাওয়াইয়ের আশা ফিকে হওয়ায় এবং সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে ইউরোপের একাধিক দেশে ফের লকডাউন শুরু হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতিও আরও ভুগবে, এই আশঙ্কায় ইউরোপ, এশিয়ার প্রায় সব শেয়ার সূচকই পড়েছে।
•আইএমএফ এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের দাবি, বিশ্ব অর্থনীতি গভীর মন্দায়। আর্থিক ভাবে আশঙ্কার থেকেও খারাপ অবস্থায় ভারত।