Business

বাজার চড়ছে, পা ফেলতে হবে সতর্ক হয়ে

পরিস্থিতির বিপরীতে হাঁটা যেন শেয়ার বাজারের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার 

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০৭:৩৭
Share:

লকডাউন শিথিল হয়ে দেশের আর্থিক কর্মকাণ্ড সবে শুরু হয়েছে। তার পরেই লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষ। নিঃসন্দেহে বড় ঘটনা। এর মধ্যেও শেয়ার বাজারের অগ্রগতি কিন্তু বিন্দুমাত্র ধাক্কা খায়নি। লাদাখের ঘটনার পর দিন সেনসেক্স উঠেছে ৩৭৬ পয়েন্ট। আর সমস্যা না-মিটলেও বৃহস্পতি ও শুক্রবার সূচক উঠেছে যথাক্রমে ৭০০ ও ৫২৪ পয়েন্ট। বাজারের এই আচরণে খুশি শেয়ার এবং ফান্ডের লগ্নিকারীরা। পরিস্থিতির বিপরীতে হাঁটা যেন শেয়ার বাজারের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

এখন প্রশ্ন হল, কেন বাজারের এই আচরণ? এর কারণ—

• বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন শিথিল হয়ে বা উঠে গিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরু হওয়া।

Advertisement

• ত্রাণ প্যাকেজের হাত ধরে বাজারে নগদের জোগান বাড়া।

• বিশ্ব বাজারের চাঙ্গা ভাব।

• আনলক-১ পর্বে দেশে বিভিন্ন শিল্পে উৎপাদন শুরু ও বাণিজ্য সচল হওয়া।

• সঞ্চয় প্রকল্পে সুদ কমায় মানুষের সস্তায় শেয়ার কেনায় ঝোঁক।

• সংক্রমণ বাড়া সত্ত্বেও করোনা ভীতি কিছুটা গা সওয়া হয়ে যাওয়া।

• কেন্দ্রও বার বার বলছে, ভারত দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়ে আগের অবস্থায় ফিরবে।

• রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের শেয়ারের বড় উত্থান।

এক নজরে অর্থনীতির বিভিন্ন মাপকাঠি

• পাইকারি মূল্য- ৩.২% সূচক (মে, ২০২০)

• রফতানি- ৩৬% (মে, ২০২০)

• ১০ বছর- ৫.৮২% মেয়াদি সরকারি বন্ডের ইল্ড

• ডলারের দর- ৭৬.২০ টাকা

• সেনসেক্স- ৩৪,৭৩১.৭৩

• নিফ্‌টি- ১০,২৪৪.৪০

• মূলধনী বাজারে- ১৭,৯৮৫ বিদেশি লগ্নি কোটি টাকা (জুনে)

• পাকা সোনা- ৪৮,৬৮০ (২৪ ক্যারাট) টাকা

• হলমার্ক সোনা ৪৬,৮৮০ (২২ ক্যারাট) টাকা

• পেট্রল- ৮১.২৭(লিটারে) টাকা

• ডিজেল- ৭৪.১৪ (লিটারে) টাকা

এত কিছুর পরেও একটা বিষয় কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। উপর উপর চাঙ্গা ভাব দেখা গেলেও অর্থনীতির ভিতরের দুর্বলতা সহজে কাটার নয়। তিন মাস ব্যবসা বন্ধের যন্ত্রণা অনেক দিন ধরে সহ্য করতে হবে। করোনা পরবর্তী বিশ্বে নতুন ভাবে ব্যবসা গোছাতে অনেক সময় লাগবে বহু সংস্থার। এপ্রিল-জুনে তাদের ফল যে বেশ খারাপ হবে তা ধরেই নেওয়া যায়। ফলে এই চাঙ্গা বাজারেও কেনাবেচায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে বুঝেশুনে।

মে মাসে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার তলিয়ে গিয়েছে শূন্যেরও ৩.২১% নীচে। চার বছরের বেশি সময়ে সর্বনিম্ন। ২০১৫ সালের নভেম্বরে ওই ছিল ৩.৭%। লকডাউনে চাহিদা কমার কারণেই এই পতন বলে ধারণা।

এ বার চোখ রাখা যাক অর্থনীতির আর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিকে—

• মে মাসে ভারতের রফতানি কমেছে ৩৬%। এপ্রিল-মে মিলিয়ে ৪৭.৫৪%। আমদানিও ৫.৬৭% কমেছে।

• শুরু হয়েছে এলআইসির বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়া। বাজারে সংস্থার প্রথম শেয়ার (আইপিও) ছাড়ার জন্য পরামর্শদাতাদের কাছে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রথম দফায় বাজারে ছাড়া হতে পারে ১০% শেয়ার।

• লকডাউনের মধ্যেও বাজারকে এই উচ্চতায় তোলার অন্যতম কান্ডারি রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়। ন’সপ্তাহে মোট ১১টি বিদেশি সংস্থা মোট ১,১৫,৬৮৪ কোটি টাকা লগ্নি করেছে জিয়ো প্ল্যাটফর্মে। আর রাইটস ইসুর মাধ্যমে এসেছে আরও ৫৩,১২৪ কোটি।

এতটা নতুন তহবিল একসঙ্গে পাওয়ায় ঋণমুক্ত হল দেশের বৃহত্তম বেসরকারি সংস্থাটি। এই খবরে তেতে ওঠে তাদের শেয়ার। সংস্থার শেয়ার মূলধন প্রথম বার ১১ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়ায়। যা শক্তি জুগিয়েছে শেয়ার বাজারকেও।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement