ফাইল ছবি
রাজ্যের চারটি বিদ্যুৎ সংস্থার আয়-ব্যয়ের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে খরচ ছাঁটাই এবং সম্পত্তি থেকে আয়ের রাস্তা খোঁজার জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করল বিদ্যুৎ দফতর।
দফতর সূত্রের খবর, তাদের অধীন বণ্টন ও সংবহন সংস্থা, রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম এবং দুর্গাপুর প্রজেক্টসের (ডিপিএল) আর্থিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কমিটি তৈরির কথা বলেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। শুক্রবার সেই নির্দেশনামাটি জারি করেন বিদ্যুৎ সচিব সুরেশ কুমার। সংস্থাগুলির অর্থ ও মানবসম্পদ বিভাগের ডিরেক্টরদের নিয়ে কমিটির সদস্য আট জন।
দেশে বিদ্যুৎ বণ্টন ও সংবহন সংস্থাগুলির একাংশের আর্থিক হাল খারাপ। সেই ধাক্কা পরোক্ষে পড়ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলির উপরেও। কারণ বণ্টন সংস্থাগুলি বকেয়া টাকা মেটাতে পারছে না তাদের। সম্প্রতি কলকাতায় এসে এই ক্ষেত্রের আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য বিদ্যুতের মাসুল হার বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে সিংহ। দাবি করেন, সুষ্ঠু এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য বণ্টন সংস্থাগুলির লোকসান কমানো জরুরি। তাই উৎপাদন ও জোগানের সব খরচের সমান হওয়া দরকার মাসুল। তবে গ্রাহকের স্বার্থে চাইলে রাজ্যগুলি ভর্তুকি দিতে পারে।
এই অবস্থায় খবর, ওই চার সংস্থাই আর্থিক ভাবে কিছুটা চাপে। পাশাপাশি রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন এবং সংবহন সংস্থার কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের রায়ও সংস্থা দু’টির বিপক্ষে গিয়েছে। সূত্রের দাবি, সেই খাতে তাদের কয়েক’শ কোটি টাকা খরচ হবে। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যে কমিটি তৈরির নির্দেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
জানা গিয়েছে, কমিটি মূলত দু’টি বিষয় খতিয়ে দেখবে। প্রথমত, সংস্থাগুলির খরচ কমাতে কী ধরনের আর্থিক পদক্ষেপ করা জরুরি। দ্বিতীয়ত, আয়ের রাস্তা চওড়া করার উপায়। তবে মাসুল থেকে আয় বৃদ্ধির পথ খুঁজতে নারাজ রাজ্য। সংস্থাগুলির সম্পত্তি বা অন্যান্য উৎস থেকেই সেই পথ বার করার দায়িত্ব কমিটির। সূত্র জানাচ্ছে, বিভিন্ন সংস্থার পুরনো সাব স্টেশন বা উদ্বৃত্ত জমিকে কাজে লাগানো হতে পারে। ১৫ দিনের মধ্যে তারা রিপোর্ট তৈরি করবে এবং ২ অগস্ট বিদ্যুৎমন্ত্রীর কাছে পেশ করবে।
এ দিকে, শুক্রবার বণিকসভা ইন্ডিয়ান চেম্বারের সভায় সুরেশ কুমার ও রাজ্যের অপ্রচলিত শক্তি দফতরের সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী কার্বন নির্গমণ কমাতে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবহার বৃদ্ধির পক্ষেও সওয়াল করেন। নন্দিনী জানান, ২০৩০-এর মধ্যে রাজ্যে ২০% অপ্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য।