দু’বছরে আমূল বদলে যাওয়া পৃথিবীতে জীবনযাপনের ধারাতেও বদল এসেছে বিস্তর। কার্যত অচেনা নানা পরিস্থিতির মোকাবিলার দিশা সমাজের জানা ছিল, এমন নয়। নতুন ভাবনা, বিশেষত ডিজিটাল প্রযুক্তির উদ্ভাবনী পরিকল্পনা সেই পথ পেরোতে অনেকটা সাহায্য করেছে। রাজ্যও চায় তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে এমন উদ্ভাবন। তাই তাতে উৎসাহ দিতে বিশেষ নীতি রূপায়ণের পরিকল্পনার কথা বৃহস্পতিবার ইনফোকমে জানালেন রাজ্যের শিল্প তথা তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। চাহিদা বুঝে নতুন ভাবনার শিল্পোদ্যোগের পক্ষে সওয়াল করলেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞেরা।
করোনা হানার পরে সার্বিক ভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু প্রযুক্তি যেমন সকলের কাছে সুবিধা পৌঁছে দিতে পারে, তেমনই অনেকে তা থেকে বঞ্চিতও হতে পারেন। যেমন, স্মার্ট ফোন কেনার সাধ্য না-থাকায় বহু পড়ুয়া স্কুল-ছুট হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাই প্রযুক্তিকে সমাজের সব স্তরে আরও নিবিড় ভাবে পৌঁছে দেওয়ার পন্থা নিয়েও চর্চা চলছে।
সামাজিক সংস্কারের পরে শিল্প এবং তার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের উন্নয়নই যে তাঁদের লক্ষ্য, ইনফোকমের উদ্বোধনে সেই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন পার্থবাবুও বলেন, ‘‘শুধু তথ্যপ্রযুক্তি হাব নয়, মুখ্যমন্ত্রী চান তার গন্তব্যই হোক পশ্চিমবঙ্গ।’’ লগ্নি টানার আর্থিক সুবিধা-সহ বিভিন্ন নীতি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘নতুন উদ্যোগ ও ভাবনাকে উৎসাহিত করতে বিশেষ নীতির কথা গুরুত্ব দিয় ভাবে রাজ্য।’’
এই মঞ্চেই এনটিটি ইন্ডিয়ার সিইও শরদ সঙ্ঘি কলকাতায় তাঁদের ডেটা সেন্টার তৈরির কথা জানান। বলেন, মুম্বই ও চেন্নাইয়ের পরে কলকাতায় হবে তাঁদের কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন-ও। গ্রাহক টানতে প্রযুক্তিতে ভরসা করার কথা বলেছেন এয়ারটেল-বিজ়নেসের সিইও (এন্টারপ্রাইজ় বিজ়নেস) গণেশ লক্ষ্মীনারায়ণ।
আর নিজের সংস্থা ও জ়োম্যাটোর উদাহরণ টেনে মানুষের কী প্রয়োজন, সেটা বুঝেই নতুন ভাবনার পক্ষে সওয়াল করেন সঞ্জীব বিখচন্দানি। তিনি যখন চাকরি ছেড়ে নওকরি ডট কম গড়ে বাজারে ঢেউ তুলেছিলেন, তখন স্টার্ট-আপ তকমা কার্যত অপরিচিত। তাঁর দাবি, এখন প্রায় ৪০% ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া উদ্যোগপতি হতে চাইছেন। ডিজিটাল প্রযুক্তি তাঁদের এগোতে সাহায্য করছে। করোনা পরবর্তী সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ভরসা রেখে এগোনোর নানা উদাহরণ উঠে আসে সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির প্রতিনিধিদের আলোচনাতেও।