নতুন পদক্ষেপ ফাইল চিত্র
রাজ্য সরকার শিল্পে বড় মাপের লগ্নি টানতে আগ্রহী হওয়ার কথা বলেছে আগেই। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। এ বার ফের দেশের বাজারের পাশাপাশি বিদেশকে পাখির চোখ করে এগোনোর বার্তা দিল তারা। আর সেই লক্ষ্যে রফতানি ব্যবসার উন্নয়নে কোমর বেঁধে মাঠে নামল। যার অন্যতম অঙ্গ রফতানি সহায়তা কেন্দ্র গড়ে তোলা। রাজ্যের দাবি, নতুন নতুন রফতানি পণ্য এবং বিক্রির বাজার চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে ঝুঁকি সামলানো, এমনকি বিপণন সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়ানোর পরিষেবাও মিলবে সেখানে, এক ছাদের তলায়।
রাজ্যের অনেক পণ্যই রফতানি হয়। সরকারি সূত্রের দাবি, সেই সঙ্গে আরও অনেকগুলির বিদেশের বাজারে ভাল ব্যবসা করার মতো সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সব পণ্য চিহ্নিত করে বিশ্বের আঙিনায় পাঠাতে প্রয়োজনীয় সাহায্যের জন্যেই মূলত এই রফতানি সহায়তা কেন্দ্র খুলছে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। গোটা পরিকল্পনায় তাদের সঙ্গী ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফরেন ট্রেড (আইআইএফটি)। বর্তমানে রফতানি ব্যবসায় যুক্ত সংস্থাগুলি নতুন বাজার কী ভাবে এবং কোথায় পেতে পারে, পণ্যে কোনও নতুন বৈচিত্র আনা যায় কিনা, সেই পরামর্শও দেবে তারা।
সূত্রের মতে, রফতানি ব্যবসায় জ্বালানি জুগিয়ে শিল্প-কর্মসংস্থানের পথটাও চওড়া করতে চায় রাজ্য। নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব সিংহ জানান, আইআইএফটি-র সঙ্গে মিলে এ মাস থেকেই জেলায় জেলায় সেই সব ক্ষেত্র এবং পণ্য চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। আশা, মাস তিনেকের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শেষ হবে।
রফতানি বাড়াতে এর আগে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য। নিজস্ব নীতির পাশাপাশি রফতানিকারীদের সমস্যা বুঝে তাঁদের সাহায্যের জন্য নিগমের বিশেষ বিভাগ (সেল) রয়েছে। সূত্রের খবর, ২০১৯-২০ সালে ইস্পাত, পেট্রোপণ্য, চর্ম শিল্প, সামুদ্রিক পণ্য, সোনা ও অন্যান্য ধাতুর গয়না, চাল ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাজ্য থেকে ৯৪৯.০৮ কোটি ডলারের (প্রায় ৭০,২৩১.৯২ কোটি টাকা) পণ্য রফতানি হয়েছে। তবে তার বৃদ্ধির হারে আরও গতি আনা জরুরি বলেও মনে করছে প্রশাসন।
নিগম সূত্রের খবর, মূলত নতুনদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে কোনও কিছু রফতানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শুল্ক সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন পণ্যের জন্য বিশেষ কোড (এইচএস কোড) রয়েছে। এ রাজ্যের সম্ভাবনাময় পণ্যগুলিকে চিহ্নিত করে বিশেষ কোড তৈরি করা হবে। যে সংস্থা (ব্যক্তিও হতে পারে) সেগুলি তৈরি করে, তাদের বিদেশের বাজারে বিক্রিতে উৎসাহ দেওয়া হবে। নিগমে তিন জন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আধিকারিক থাকবেন। জেলা শিল্প কেন্দ্রগুলির আধিকারিক ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবে আইআইএফটি।
নতুনদের সঙ্গে অবশ্য বর্তমানে রফতানিতে যুক্তদেরও ব্যবসা সম্প্রসারণে সাহায্য করতে চেষ্টা করবে রফতানি সহায়তা কেন্দ্র, দাবি রাজ্যের। সে ক্ষেত্রে পণ্যের নতুন বাজারের সন্ধান, সেখানকার নিয়মকানুন সংক্রান্ত তথ্য জোগাড়, পণ্যে বৈচিত্র আনার মতো নানা রকম সহায়তা দেওয়া হবে। পরিকল্পনাটির খসড়া ভোটের আগেই তৈরি হয়েছিল। তৃতীয় দফার তৃণমূল সরকারের আমলে তা এ বার কার্যকর করার পালা।