প্রতীকী ছবি।
মাস খানেক আগে এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মাশিয়াল ডিরেক্টর মীনাক্ষী মালিক চিঠি দিয়ে সংস্থার কর্তাদের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছিলেন। তখনই গুঞ্জন ওঠে, লোকসানে ধুঁকতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থাটিকে বিক্রির জন্য যখন মরিয়া কেন্দ্র, তখন কেন তাকে চাঙ্গা করতে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ? সূত্রের খবর, সেটা ছিল পরিকল্পনার সূচনা। যে পরিকল্পনায় এ বার সংস্থার কর্মীরাই এয়ার ইন্ডিয়ার (এআই) মালিকানা নিজেদের হাতে তুলে নিতে চাইছেন।
বুধবার এক সূত্রের দাবি, এআইকে কিনতে ইচ্ছাপত্র জমা দেবেন কর্মীরা। নিয়ম অনুযায়ী, কর্মীরা সংস্থার দায়িত্ব নিতে চাইলে, ন্যূনতম ২০০ জনকে নিয়ে কনসর্টিয়াম বা গোষ্ঠী গড়তে হয়। ওই সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীদের গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। শীঘ্রই ইচ্ছাপত্র জমা দেবেন তাঁরা।
কিন্তু টাকা আসবে কোথা থেকে? দিল্লির সূত্র জানিয়েছে, এক লগ্নিকারীর সঙ্গে কথা হয়েছে। কনসর্টিয়ামের দেওয়া ইচ্ছাপত্র মঞ্জুর হলে, সংস্থা পরিচালনার ভার তাদের হাতে দেওয়ার জন্য পরবর্তী বন্দোবস্ত শুরু হবে। উচ্চপদস্থ কর্তারা ছাড়াও পর্ষদে লগ্নিকারীর প্রতিনিধিও থাকবেন।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, এতদিন ধরে যে কর্মীরা সংস্থাকে বাণিজ্যিক ভাবে সফল করে তুলতে পারেননি, তাঁরা কেন পুরো দায়িত্ব নিতে চান? বিশেষত সারা বিশ্বে যখন উড়ান ব্যবসা সঙ্কটে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পরিষেবার খোলনলচে বদলে না-ফেললে এগোনো যাবে না।
সংস্থার অবস্থা
• দেশের প্রথম বিমান সংস্থা
টাটা এয়ারলাইন্স চালু
করে টাটা গোষ্ঠী। পরে তার নাম হয় এয়ার ইন্ডিয়া। সরকারের হাতে যায় রাশ। ১৯৫৩-তে হয় জাতীয়করণ।
• ক্ষতির বোঝা বাড়ছে এখন। ঘাড়ে চেপে প্রায় ৬৮,০০০ কোটি টাকার দেনা।
• ২০১২ সালে ৩০,০০০ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প এনেছিল ইউপিএ সরকার।
• ক্ষমতায় এসে বিলগ্নির সিদ্ধান্ত নেয় মোদী সরকার।
আগ্রহী টাটারা
•সূত্রের খবর, টাটা গোষ্ঠী ফের এয়ার ইন্ডিয়ার রাশ হাতে নিতে আগ্রহী।
• সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের সঙ্গে তৈরি বিস্তারা মারফত ইচ্ছাপত্র জমা দিতে পারে।
কোমর বাঁধছেন কর্মীরাও
•এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা হাতে নিতে চান কর্মীরাও।
• ১৪ ডিসেম্বরের আগেই ইচ্ছাপত্র জমা দেবেন তাঁরা।
• এ জন্য তৈরি কমপক্ষে ২০০ জন কর্মীর
জোট। কথা হয়েছে লগ্নিকারীর সঙ্গেও।
সংস্থা সূত্রের অবশ্য দাবি, প্রথমত, এখন দৈনন্দিন পরিচালনায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ থাকে। তা সরলে বাণিজ্যিক সাফল্য আসা সময়ের অপেক্ষা। দ্বিতীয়ত, সংস্থায় অভিজ্ঞ ও পারদর্শী কর্মীর অভাব নেই। সুযোগ এবং স্বাধীনতা পেলে তাঁরাই এনে দিতে পারবেন বাণিজ্যিক সাফল্য।