প্রতীকী ছবি।
বাজেটেই ঘোষণা হয়েছিল উজ্জ্বলা যোজনায় নিখরচায় আরও এক কোটি রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হবে। এই প্রকল্পে যা পাওয়ার কথা প্রতিটি দরিদ্র পরিবারের একজন মহিলার। রবিবার সংবাদ সংস্থাকে তেলসচিব তরুণ কপূর জানান, কেন্দ্র এই লক্ষ্য পূরণ করতে চায় দু’বছরের মধ্যে। তাঁর এই দাবির পরে এ দিন মধ্যরাতেই রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম আরও ২৫ টাকা বেড়ে দাঁড়াল ৮৪৫.৫০ টাকা। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, ডিসেম্বর থেকে ২২৫ টাকা বেড়ে সিলিন্ডারের দর যেখানে পৌঁছছে, তার সংযোগ নেওয়ার ১৬০০ টাকা মকুব করে মোদী সরকার ঠিক কী প্রমাণ করতে চাইছে?
তাদের তোপ, উজ্জ্বলা প্রকল্পে সাফল্যের ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গরিবের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেও, এত চড়া দামে গ্যাস কেনার ক্ষমতা সেই মানুষদের আছে কি? যদি না-থাকে, তা হলে সরকারের তরফে আগে এই সমস্যার সমাধান কোথায়? নতুন সংযোগ নেওয়ার আগেতো গ্যাস ব্যবহারের খরচ সামলানোর প্রশ্নেই আটকে যাবেন তাঁরা। তার উপর কেন্দ্র এখন ভর্তুকি দেয় নামমাত্র। উজ্জ্বলার গ্রাহকেরাও যা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পান সিলিন্ডার কেনার পরে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রকল্পটির সারবত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধী-সহ ওই গ্রাহকদের একাংশ।
কপূর অবশ্য চার বছরে নিখরচার আট কোটি সংযোগ দেওয়ার তথ্য দেখিয়ে সাফল্যের কথাই বলেছেন। জানিয়েছেন, প্রাথমিক হিসেবে দেশের প্রায় ২৯ কোটি পরিবার রান্না করে এলপিজি-তে। উজ্জ্বলায় আরও এক কোটি যোগ হলেই তা পৌঁছবে সব পরিবারে। তাঁর দাবি, এ জন্য বাজেটে আলাদা অর্থ বরাদ্দ হয়নি। জ্বালানিতে সাধারণ ভাবে ভর্তুকি দিতে যে টাকা বরাদ্দ, খরচ হবে সেখান থেকেই।
তবে গ্রাহকদের আক্ষেপ, সংযোগ দিলেই কি সব দায় শেষ? সিলিন্ডার কেনাটাই তো এখন বিড়ম্বনা। অন্তত ভর্তুকি যথেষ্ট বাড়লে তা-ও সুরাহা হত। তার উপরে করোনা বহু মানুষের রোজগারে ধাক্কা দিয়েছে। গত বছর দরিদ্রদের সুবিধা দেওয়ার কথা বলে এপ্রিল থেকে জুন সিলিন্ডারের পুরো
দামই অগ্রিম দেওয়ার ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। তা-ও প্রশ্নের মুখে পড়ে, যখন
দেখা যায় এপ্রিল, মে মাসে যাঁরা গ্যাস কেনেননি, তাঁরা জুনে অগ্রিম পাচ্ছেন না। কেন্দ্র এই দায় ঠেলে তেল সংস্থাগুলির ঘাড়ে। আর সংস্থাগুলির অভিযোগ ছিল, এই প্রকল্পে এত টাকা বকেয়া পড়ে যে, তা না-পেলে অগ্রিম দেওয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্র অবশ্য প্রকল্পটির মেয়াদ পরে কিছুটা বাড়ায়।
সিলিন্ডার সহজে দিতে একই এলাকায় তিন জন ডিলারের এক জনকে বেছে নেওয়া, সংযোগ পেতে নামমাত্র নথি বা শহর বদলালে সহজে সংযোগের কথাও বলেন কপূর।