Sanjay Roy on RG Kar case

যে যেখানে পারছে সই করিয়ে নিচ্ছে! ফাঁসানো হচ্ছে আমাকে, বিচারককে আরও কী বললেন সঞ্জয়

শিয়ালদহ আদালতে সোমবার দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিট নাগাদ বিচারক অনির্বাণ দাসের এজলাস বসে। সঞ্জয়কে সেখানে আনা হয় ১২টা ৪১ মিনিট নাগাদ। তিনি দাবি করেন, তিনি কিছুই করেননি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:০৫
Share:

শিয়ালদহ আদালতে সঞ্জয় রায়ের শাস্তি ঘোষণার সংক্রান্ত শুনানি শুরু হয়েছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

শিয়ালদহ আদালতে আবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেন আরজি কর মামলায় দোষী সঞ্জয় রায়। বললেন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে যে যা খুশি করছে বলে অভিযোগ সঞ্জয়ের। তাঁকে দিয়ে একাধিক জায়গায় সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান বিচারককে। সঞ্জয়ের দাবি, তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে। বিচারক তাঁকে জানান, আগেও নিজের বক্তব্য জানানোর সুযোগ পেয়েছেন সঞ্জয়।

Advertisement

শিয়ালদহ আদালতে সোমবার দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিট নাগাদ বিচারক অনির্বাণ দাসের এজলাস বসে। সঞ্জয়কে সেখানে আনা হয় ১২টা ৪১ মিনিট নাগাদ। শনিবারের মতোই সোমবারও তিনি কমলা এবং ছাইরঙা জ্যাকেট (হুডি) পরে ছিলেন। ভিতর থেকে বেগনি রঙের শার্টও দেখা যাচ্ছিল। চুল-দাড়ি কামিয়ে এসেছিলেন সঞ্জয়। বিচারক জানান, ধর্ষণকালীন সঞ্জয় এমন আঘাত করেছেন, যে মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এর পর সঞ্জয়কে তাঁর বক্তব্য জানাতে বলা হয়। সঞ্জয় জানান, তিনি কিছুই করেননি।

সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমি কোনওটাই করিনি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আগের দিনও বলেছি। আমি শুনেছি, অনেক কিছু নষ্ট করা হয়েছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল। আমাকে মারধর করা হয়েছে। যার যা ইচ্ছা করছে। যেখানে খুশি সই করিয়ে নিচ্ছে।’’

Advertisement

সঞ্জয় আরও বলেন, ‘‘প্রথমে পুলিশের হাত থেকে সিবিআই এই মামলা নিল। জোকাতে আমার মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে নিয়ে যাবে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে কমান্ড হাসপাতালের দিকে নিয়ে গেল। আবার শিয়ালদহের হাসপাতালে নিয়ে আসা হল।’’

বিচারক বলেন, ‘‘আপনাকে তিন ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল। ওই দিন কী হয়েছিল, আপনার থেকে ভাল সেটা আর কেউ জানে না। আমি এখানে বিচার করতে বসেছি। যা যা সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে, সব দেখে মনে হয়েছে আপনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক। আপনি তো আগেও আপনার কথা বলেছেন।’’

সঞ্জয়ের বাড়িতে কে কে আছেন, জানতে চান বিচারক। সঞ্জয় জানান, তাঁর মা আছেন। কিন্তু বাড়ি থেকে কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। বিচারক বলেন, ‘‘নির্দোষ ছাড়া আর কিছু বলতে চান?’’ সঞ্জয় বলেন, ‘‘যে কাজটা আমি করিনি, তার জন্য আমাকে দোষী বলা হচ্ছে।’’

সঞ্জয়ের আইনজীবী আদালতে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘‘সিবিআই এটাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা বলছে। মৃত্যুদণ্ড চাইছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশে দেখা যাচ্ছে, বিরলের মধ্যে বিরলতম কোনটাকে বলা হয়। মৃত্যুদণ্ডের আগে পর্যাপ্ত প্রমাণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সে সব নির্দেশে।’’ প্রথমেই মৃত্যুদণ্ড না-দিয়ে যাতে দোষীকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়, সে কথাও আদালতে বলেন সঞ্জয়ের আইনজীবী।

আদালতে বিচারকের হাতে কিছু নথি তুলে দেন সঞ্জয়ের আইনজীবী। সে সময়ে তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘ওঁকে বাঁচানোর এটাই আমাদের শেষ সুযোগ।’’ মৃত্যুদণ্ড না-দেওয়ার আবেদন জানান তিনি। বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনার বিচারে যা সঠিক শাস্তি, তা-ই দিন। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড দেবেন না।’’ এই সময়ে কাঠগড়ায় নির্লিপ্ত ভাবেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সঞ্জয়। হাত সামনের দিকে ঝুলিয়ে সোজা তাকিয়ে ছিলেন তিনি। বিচারক জানান, বিকেল পৌনে ৩টে নাগাদ আবার এজলাস বসবে। ওই সময়ে সঞ্জয়ের শাস্তি ঘোষণা করবেন তিনি।

(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম, পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। আনন্দবাজার অনলাইন সেই নিয়ম মেনেই আরজি কর পর্বের প্রথম দিন থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম বা ছবি প্রকাশ করেনি। শনিবার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করায় আমরা তাঁর নাম এবং ছবি প্রকাশ করা শুরু করছি।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement