প্রতীকী ছবি।
Cap:
অবশেষে শেয়ার বাজারে সত্যিকারের সংশোধন। অর্থনীতির নানা বিষয়ে আশঙ্কা বাস্তবে মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা যত প্রবল হচ্ছে, ততই দুর্বল হতে দেখা যাচ্ছে সূচককে। গত সপ্তাহে সেনসেক্স নেমেছে ২২৭২ পয়েন্ট বা ৩.৭১%। লগ্নিকারীদের খাতা থেকে কয়েক লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ মুছেছে। সেনসেক্স দাঁড়িয়েছে ৫৯,০৩৭ অঙ্কে। নিফ্টি ১৭,৬১৭-তে। তবে যন্ত্রণা এখানেই শেষ হচ্ছে না। অর্থনীতির আকাশে কালো মেঘ ঘনাচ্ছে অশোধিত তেলের বাড়তে থাকা দামে। করোনার বিধিনিষেধের ফলে সরবরাহ সমস্যা এবং পেট্রল, ডিজ়েল, কাঁচামালের চড়া দরে মূল্যবৃদ্ধির দৈত্য মানুষের জীবনে থাবা বসিয়েছে আগেই। এখন বিশ্ব বাজারে তেল ফের বেলাগাম হওয়ায় জনজীবন এবং অর্থনীতিতে সেই থাবার ক্ষত আরও দগদগে হবে কি না, উঠছে প্রশ্ন। ফলে উদ্বিগ্ন লগ্নিকারীরাও।
তার উপরে আমেরিকার মতো দেশ সুদ বাড়াতে এবং ত্রাণ গোটাতে শুরু করলে বাজারে আরও পতনের আশঙ্কা থাকছেই। যদিও উপযুক্ত কারণ ছাড়া অস্বাভাবিক উঁচুতে পৌঁছনো সূচকের এই পতন কাম্য ছিল। এতে যুক্তিহীন ভাবে উঠে থাকা বহু শেয়ারের দাম নেমে বাস্তবসম্মত হবে। লগ্নিকারীরা যুক্তিযুক্ত দামে ভাল শেয়ার কিনতে পারবেন।
তবে ভারতকে বড় সঙ্কটে ফেলতে পারে অশোধিত তেল। এখন ব্যারলে যা ৮৭.৮৯ ডলার। এক মাসে ৭৫.২৯ ডলার থেকে ১৬.৭৪% বেড়েছে। আশঙ্কা, এই হারে এগোলে দ্রুত ১০০ ডলার ছোঁবে। এর ফলে এক দিকে দেশের আমদানি বিল চড়া হবে, অন্য দিকে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন মিটলে দামের ধাক্কা নামবে সাধারণ মানুষের উপরে। কলকাতায় পেট্রল, ডিজ়েল সেই নভেম্বরের গোড়া থেকেই রয়েছে লিটারে যথাক্রমে ১০৪.৬৭ টাকা এবং ৮৯.৭৯ টাকায়। তা ফের মাথা তুলতে পারে। সেটা হলে শক্ত হবে ঊর্ধ্বমুখী পণ্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। মোদ্দা কথা অশোধিত তেল মূল্যবৃদ্ধিকে উস্কে দিয়ে চাহিদার ঘুরে দাঁড়ানোর জমি কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আর্থিক বৃদ্ধির হারে এমন আঘাত দিতে পারে, যা জল ঢালবে অর্থনীতি নিয়ে শেয়ার বাজারের সব আশায়।
বাজারকে ভাবাচ্ছে আমেরিকা ও ভারতে সুদ বাড়ার আশঙ্কাও। দু’দেশেই বন্ড ইল্ড বাড়ছে। গত সপ্তাহে ভারতে ১০ বছর মেয়াদি বন্ড ইল্ড হয়েছে ৬.৬২%। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোর আগেই কিছু ব্যাঙ্ক মেয়াদি জমায় সুদ বাড়াচ্ছে। প্রবীণ নাগরিকদের পক্ষে এটা ভাল কথা। তবে আমেরিকায় সুদ বাড়লে এ দেশ ছাড়তে পারে বিদেশি লগ্নি, যা বাজারকে আরও দুর্বল করবে।
(মতামত ব্যক্তিগত)