দেশের সভরিন ক্রেডিট রেটিং অপরিবর্তিত রাখল এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস। ছবি: রয়টার্স।
সরকারি মহল চায় ঋণ শোধের ঝুঁকির নিরিখে ভারতের মূল্যায়নে উন্নতি হোক। তা হলে এ দেশ বিদেশি লগ্নির মানচিত্রে আরও আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই আশায় আরও একবার জল ঢালল আমেরিকার মূল্যায়ন বহুজাতিক এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস। ভারতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী এবং দ্রুত এগোচ্ছে দাবি করেও তারা এ দেশের সভরিন ক্রেডিট রেটিং অপরিবর্তিত রাখল। অর্থাৎ দীর্ঘ মেয়াদে তা রইল ‘BBB-’। অর্থনীতি সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি আগের মতো স্থিতিশীল। সম্প্রতি আর এক মূল্যায়ন সংস্থা ফিচও দেশকে এই মূল্যায়ন দিয়েছে। ফলে এই নিয়ে প্রায় ১৬ বছর ভারতের সভরিন রেটিং থমকে রইল একই জায়গায়।
সময়মতো শোধের ক্ষমতার প্রেক্ষিতে কোনও দেশকে ঋণ দেওয়া কতটা ঝুঁকির, তা তুলে ধরতে মূল্যায়ন করে ফিচ, এসঅ্যান্ডপি, মুডি’জ়-এর মতো সংস্থা। ‘BBB-’ লগ্নি এবং ঋণ পাওয়ার যোগ্যতার সর্বনিম্ন ধাপ। লগ্নির অযোগ্য ধাপের ঠিক উপরে। তবে অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গি স্থিতিশীল মানে, মূল্যায়ন কমার আশঙ্কা নেই।
ফিচের মতো এসঅ্যান্ডপি-ও বলেছে, এই স্থিতিশীলতা ভারতীয় অর্থনীতির শক্তিশালী ভিত এবং মোটা রাজস্ব আদায়ের প্রতিফলন। চলতি বছরে ৬% আর্থিক বৃদ্ধির আশা। যা শ্লথ বিশ্ব অর্থনীতির মধ্যে দাঁড়িয়ে অন্যান্য সম্ভাবনাময় বাজারের তুলনায় বেশ ভাল। বলেছে, লগ্নি ও বিক্রিবাটা ৩-৪ বছরে পোক্ত বৃদ্ধির সহায়ক হতে পারে। লোকসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা আর্থিক সংস্কারের পক্ষেও সহায়ক। তবে একই সঙ্গে তাদের হুঁশিয়ারি এ দেশে মাথা পিছু জিডিপি নিচু, রাজকোষ ঘাটতিকে নিয়ন্ত্রণের মতো ক্ষেত্রে সরকারের আর্থিক কার্যক্ষমতা দুর্বল, ঘাড়ে চেপে চড়া ঋণ। রাজস্ব আদায় ভাল হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক ভাবে আঁটোসাঁটো হওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে। মুডি’জ়ও ভারতকে লগ্নি যোগ্যতার শেষ ধাপে রেখেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, লগ্নি টানার নিরিখে ভারত যদি আগের থেকে উন্নতিই করে থাকে, তা হলে মূল্যায়নে সেই বদলের ছাপ কোথায়? বিশেষত এই রেটিং দেখেই যেহেতু লগ্নির সিদ্ধান্ত নেয় বিদেশি সংস্থাগুলি, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সহজে ধার জোগাড় করা যায়।