এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস। —ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি গত অর্থবর্ষের জন্য কেন্দ্রকে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকা ডিভিডেন্ড দেওয়ার কথা বলেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। এর এক সপ্তাহের মাথায় ভারতীয় অর্থনীতি সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি ‘স্থিতিশীল’ থেকে এক ধাপ বাড়িয়ে ‘ইতিবাচক’ করল মূল্যায়ন বহুজাতিক এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস। ১৪ বছর পরে। দেশের রেটিং অর্থাৎ মূল্যায়ন অবশ্য অপরিবর্তিত (BBB-) রেখেছে। এটি লগ্নিযোগ্যতার শেষ ধাপ। তবে বলা হয়েছে, সরকার সতর্ক আর্থিক নীতি এবং ঋণনীতির মাধ্যমে ঋণের বোঝা এবং সুদ কমিয়ে আনতে পারলে দু’বছরের মধ্যে মূল্যায়নেও তার প্রভাব পড়বে। বস্তুত, দৃষ্টিভঙ্গি ‘ইতিবাচক’ করার মানেই হল, আগামী দিনে মূল্যায়ন বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত।
এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ দাবি করে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, দিন সাতেক আগে এসঅ্যান্ডপি-ই বলেছে আরবিআইয়ের ডিভিডেন্ডের টাকা কেন্দ্র চলতি অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি কমাতে খরচ করলে ভারতের মূল্যায়ন বাড়াতে পারে রেটিং সংস্থাগুলি। আর মূল্যায়ন বৃদ্ধি মানেই দেশের ঋণ শোধ না হওয়ার ঝুঁকি কমা এবং লগ্নির জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠা। তবে বাস্তবে ওই টাকায় ঘাটতি কমানো নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছিল তারা। বলেছিল, বিলগ্নিকরণের লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা এবং নতুন সরকারের বাজেটে খরচের খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ সেই পথে কাঁটা হতে পারে।
অতীতে দেশের নিচু মূল্যায়ন নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করে রেটিং সংস্থাগুলির সমালোচনা করলেও, দৃষ্টিভঙ্গির উন্নতি পোক্ত অর্থনীতির ফল বলে এ দিন দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। উল্লেখ্য, ক্রেডিট রেটিং হল কোনও দেশ বা সংস্থার ঋণযোগ্যতার মাপকাঠি। এই মূল্যায়ন ভাল হলে কম সুদে বিদেশ থেকে ঋণ মিলতে পারে। সম্প্রতি শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডিভিডেন্ডের ঘোষণার পরে প্রশ্ন ওঠে, এই টাকা কি কেন্দ্র ঘাটতি কমাতে কাজে লাগাবে, নাকি সরকারি খরচ বাড়াবে? মূল্যায়ন সংস্থাগুলি ব্যাখ্যা দিয়েছিল, ঘাটতি কমানো গেলে ঋণ নিতে হবে কম। বাজারে নগদের জোগানও বাড়বে। কমবে সুদের হার। এই আলোচনার মধ্যেই ভারত সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির এই উন্নতি।
দৃষ্টিভঙ্গি সংশোধনের কথা জানিয়ে এসঅ্যান্ডপি বলেছে, ‘‘পোক্ত আর্থিক অগ্রগতি, সরকারি খরচের মান এবং ঘাটতি কমিয়ে আনার রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণে এই পদক্ষেপ। বিগত পাঁচ বছরে পরিকাঠামোয় সরকারি খরচ বেড়েছে। যা খুলে দিয়েছে আর্থিক বৃদ্ধির রাস্তা। ভোটের ফল যা-ই হোক, নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলেই আশা।’’ সঙ্গে পরামর্শ, সরকারি ঋণ জিডিপির ৭ শতাংশের নীচে নামানোর চেষ্টা করতে হবে।