প্রতীকী চিত্র।
দেশে উৎপাদিত খাদ্যশস্যের ১০০% চটের বস্তায় রাখা বাধ্যতামূলক। চিনির ক্ষেত্রে তা ২০%। চটকলগুলির থেকে সেই বস্তা সংগ্রহ করে রাজ্যগুলির মধ্যে তা বণ্টন করে কেন্দ্র। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের খবর, এ বছর কেন্দ্রের তরফে এখনও যে বস্তা মঞ্জুর করা হয়েছে, বেশ কয়েকটি রাজ্যের ক্ষেত্রে তা যথেষ্ট নয়। সে কারণে চটকলগুলির থেকে সরাসরি বস্তা কিনতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। এই তালিকায় পঞ্জাব, ছত্তীসগঢ়ের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্য থাকায় বিষয়টি আলাদা মাত্রা পেয়েছে। তবে কেন্দ্রকে ‘এড়িয়ে’ এই ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে, এমন কথা বলতে চাইছে না কোনও পক্ষই। যদিও বস্তার জন্য কেন্দ্র যে দাম দিচ্ছে তা নিয়ে চটকল মালিকেরা অখুশি।
চটকল মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশেনের চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘রাজ্যগুলির মধ্যে বণ্টনের জন্য চটকলগুলিকে কেন্দ্র মোট ১৫ লক্ষ বেল বস্তার বরাত দিয়েছে। রাজ্যগুলিকে ওই বস্তা তাদের চাহিদার অনুপাতে বণ্টন করা হবে। কিন্তু অনেক রাজ্যেরই বেশি বস্তার প্রয়োজন। তাই তারা নিজেরাই তা কেনার জন্য দরপত্র চেয়েছে।’’
চট শিল্প মহলের খবর, পঞ্জাবে এ বছরই বিধানসভা নির্বাচন। যেখানে কৃষক আন্দোলন প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে। কৃষকদের থেকে খাদ্যশস্য কেনার বিষয়টিও সে রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বস্তার অভাবে তাতে ব্যাঘাত ঘটতে দেওয়ার ঝুঁকিও তাদের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণে বস্তা কেনার জন্য বাড়তি পদক্ষেপ করছে তারা। একই ভাবে উদ্যোগী হয়েছে আরও কয়েকটি রাজ্য।
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম এবং বিহার চটের বস্তা উৎপাদন করে। সবচেয়ে বেশি বস্তা তৈরি করে অবশ্য এ রাজ্যই। রাঘবেন্দ্রবাবুর কথায়, ‘‘রাজ্যগুলি যে দরপত্র চেয়েছে, তাতে সব রাজ্যের চটকলই সাড়া দেবে। দরপত্রে যে যা দাম দেবে, তার ভিত্তিতেই জুটবে বরাত।’’
এ দিকে, বস্তা কেনার জন্য কেন্দ্র যে দাম ঠিক করেছে, তাতে ক্ষুব্ধ চটকল মালিকেরা। এক চটকল মালিকের অভিযোগ, কেন্দ্রের দামে টন প্রতি ৪০০০ টাকার মতো লোকসান গুনতে হবে চটকলগুলিকে। চটের বস্তা কেনার জন্য কেন্দ্রীয় ট্যারিফ কমিশন যে দাম সুপারিশ করেছে, সরকার তা এখনও কার্যকর করেনি। ফলে লোকসান গুনেও কেন্দ্রকে বস্তা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে চটকলগুলি। তবে পঞ্জাব, ছত্তীসগঢ়ের মতো যে সব রাজ্য চটের বস্তা কেনার জন্য উদ্যোগী হয়েছে, তাদের কাছ থেকে তুলনায় বেশি দাম পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন চটকল মালিকেরা।