বাজেটে সরকারের ঘোষিত নতুন কর ব্যবস্থাটি আগে ছিল বিকল্প, আগামী অর্থবর্ষ থেকে হবে প্রধান। প্রতীকী ছবি।
এক মাস হতে চলল সংসদে বাজেট পেশ হয়েছে। অনেকেই হিসাব কষে দেখে নিয়েছেন, নতুন এবং পুরনো কর কাঠামোর মধ্যে কোনটি কার পক্ষে বেশি লাভজনক। বাজেটে সরকারের ঘোষিত নতুন কর ব্যবস্থাটি আগে ছিল বিকল্প, আগামী অর্থবর্ষ থেকে হবে প্রধান। এতে ছাড়ের সংখ্যা কমলেও, করের হারে সুবিধা রয়েছে। অনুমান, বেশিরভাগ মানুষ নতুনের দিকে ঝুঁকবেন হাতে বাড়তি টাকা থাকায়। আয়কর দফতরের ওয়েবসাইটে দেওয়া ক্যালকুলেটরে নিজের ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের সম্ভাব্য আয়ের তথ্য দিয়ে দেখে নেওয়া যাবে কোন কাঠামো লাভজনক।
নতুন ব্যবস্থায় কর দিলে আগামী অর্থবর্ষে ছাড় পাওয়ার লক্ষ্যে ৮০সি ধারায় লগ্নি করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। ফলে এক দিকে কর কমে যাওয়া এবং অন্য দিকে লগ্নি না করা— এই দুই কারণে হাতে নগদ বাড়বে। উদ্বৃত্ত টাকা খরচ করলে তা শিল্পের পক্ষে ভাল। তাতে পণ্যের চাহিদা তৈরি হবে। তবে মানুষ সঞ্চয়ের পথ থেকে সরলে সম্পদ তৈরি হবে কম। কমবে ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক সংস্থান। যে কারণে বাধ্যবাধকতা না থাকলেও, ভাল প্রকল্পে সঞ্চয় চালিয়ে যাওয়া জরুরি। বিশেষত তাঁদের, যাঁরা স্বনিযুক্ত, যাঁদের পিএফ, গ্র্যাচুইটি এবং পেনশনের বালাই নেই।
সে ক্ষেত্রে পিপিএফ সঞ্চয়ের আদর্শ জায়গা হতে পারে। নতুন বিকল্পে পিপিএফের লগ্নিতে করছাড় নেই। তবে সুদ করমুক্ত। এর ৭.১% করমুক্ত সুদ ৩০% হারে করদাতাদের কাছে ১০.১৪% আর ২০% হারে করদাতাদের কাছে ৮.৮৭৫% করযুক্ত সুদের সমান।
বিকল্প আয়কর কাঠামোয় গৃহঋণের সুদ এবং বাড়ি ভাড়া বাবদ করছাড় মিলবে না। তবে দেয় করের পরিমাণ কমায় অনেকের তাতে অসুবিধা হবে না। বরং ৮০সি ধারায় সঞ্চয় না করলে হাতে বাড়তি টাকা থাকবে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামেও ছাড় না মেলায় বিমা বন্ধ করলে বিপদ ঘনাবে। অবসর জীবনের পুঁজিতে কোপ পড়বে, অতিরিক্ত ৫০,০০০ টাকা জমার উপর করছাড় উঠে যাওয়ায় এনপিএস না করলেও। বিশেষত যাঁদের পেনশনের সুবিধা নেই। আয়করের পুরনো কাঠামোয় থাকা ছাড়গুলির বেশিরভাগই নেই নতুনে। তবু একে লাভজনক মনে হতে পারে একাংশের। কারণ, পুরনোটির মতো ৫০ হাজার টাকা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন আছে। রয়েছে অল্প কয়েকটি ছাড়। তাই দিয়ে কাজ চলে যেতে পারে।
(মতামত ব্যক্তিগত)