—প্রতীকী চিত্র।
এতদিন ৫০০ বর্গ মিটারের (৭.৪৭৫ কাঠা) চেয়ে বড় জমি কিংবা আটটি ফ্ল্যাটের (অ্যাপার্টমেন্ট) চেয়ে বড় আবাসনের ক্ষেত্রে কার্যকর হত আবাসন আইন (রেরা)। সেগুলিকে রেরা-র আওতায় নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক ছিল। এ বার রাজ্যে তার থেকে কিছু ছোট প্রকল্পকেও এর অধীনে আনা হল।
পশ্চিমবঙ্গ রেরা কর্তৃপক্ষের (ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি) চেয়ারম্যান সন্দীপন মুখোপাধ্যায় জানান, ২০০ বর্গ মিটারের (প্রায় তিন কাঠা) চেয়ে কম জমি বা ছ’টি ফ্ল্যাটের (অ্যাপার্টমেন্ট) চেয়ে কম আবাসন প্রকল্পকে রেরা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই আইনে সেগুলির নথিভুক্তি বাধ্যতামূলক নয়। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, তার মানে রাজ্যে ২০০ বর্গ মিটার বা তার চেয়ে বড় জমি কিংবা ৬টি বা তার চেয়ে বেশি ফ্ল্যাটের সব প্রকল্পকেই আবাসন আইনের আওতায় আনা হল। সেখানে নথিভুক্ত হতে হবে সেগুলিকে। এই সব সম্পত্তি সংক্রান্ত সমস্ত অভাব-অভিযোগ মীমাংসার জন্য ক্রেতা-বিক্রেতারা রেরা-র দ্বারস্থ হতে পারেন।
এই কেন্দ্রীয় আবাসন আইন রাজ্যে চালু হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ ছিল, ছোট আবাসন বা প্লটের (জমি) প্রকল্পেই সব থেকে বেশি সমস্যা তৈরি হয়। পুঁজি কম থাকায় সেগুলির ক্রেতাদের ভোগান্তিও হয় বেশি। অথচ সেই সমস্ত মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য রেরার দরজা বন্ধ। এই যুক্তি তুলে ধরেই রেরা-এ শামিল হওয়ার ন্যূনতম সীমাকে আরও কমিয়ে তিন কাঠা জমি এবং ছ’টি ফ্ল্যাটের আবাসন প্রকল্প করার প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্যের আবাসন দফতর। কারণ, এটি কেন্দ্রীয় আইন হলেও রাজ্য নিজের মতো শর্ত সংশোধন করতে পারে।
আবাসন প্রকল্পে চুক্তির খেলাপ হলে (বিক্রেতা বা ক্রেতা, সবার ক্ষেত্রেই) সহজে তার মীমাংসা করতে কেন্দ্র রেরা চালু করেছিল ২০১৬-তে। কিন্তু রাজ্য তা না মেনে গোড়ায় আলাদা আইন (হিরা) আনে। যাকে পরে সুপ্রিম কোর্ট অসাংবিধানিক আখ্যা দেয় এবং অবিলম্বে রেরা আনার নির্দেশ জারি করে। পশ্চিমবঙ্গ রেরা কর্তৃপক্ষ তৈরি হয় গত বছরের শেষে।
সন্দীপনবাবু জানান, হিরা-তে বকেয়া আবেদন রেরা-তে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই কাজ চলছে। আবেদনকারীরাও রেরা-র সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গ রেরা কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ২০০টির বেশি অভিযোগ এসেছে। তার ৫০টিরও বেশির মীমাংসা হয়েছে। বেশিরভাগ অভিযোগ প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। তবে দু’জন ক্রেতার বিরুদ্ধে নালিশ, তাঁরা বুকিংয়ের টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কেনার চুক্তি করেও তার পরে আর প্রোমোটারদের প্রাপ্য মেটাননি।