প্রতীকী ছবি।
অন্যান্য শিল্পের মতো অতিমারি ব্যবসায় পাঁচিল তুলেছিল ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পের (এমএসএমই) সামনেও। কিন্তু এমএসএমই মহলের দাবি, তাদের ক্ষেত্রে সেই অভিঘাত অনেক বেশি। বরাতে ধাক্কা, কার্যকরী মূলধনে টান, ঋণ পাওয়ার সমস্যা এবং বড় বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি সংস্থার থেকে প্রাপ্য বকেয়া পেতে ভোগান্তিতে কার্যত সঙ্কটের চোরাবালিতে পড়েছে অনেক সংস্থা। তৃতীয় ঢেউয়ে ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছে তারা। তাই বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে তাদের বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছে এই শিল্পের সংগঠনগুলি। দিয়েছে নগদ জোগান বৃদ্ধি, সহজে ঋণের রাস্তা তৈরি, প্রাপ্য বকেয়া নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া, উপাদানের দামে লাগাম টানা-সহ একগুচ্ছ প্রস্তাব।
এমএসএমই-র সব চেয়ে বড় সমস্যা কার্যকরী মূলধনের ধারাবাহিক জোগান। ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ এবং বড় সংস্থার থেকে ঠিক সময়ে প্রাপ্য বকেয়া না-পাওয়ায় তাতে টান পড়েছে। সম্প্রতি সংসদে কেন্দ্র জানায়, লকডাউনের পরে ‘ন্যাশনাল স্মল ইন্ড্রাস্ট্রিজ় কর্পোরেশন’-এর সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৯% এমএসএমই-র ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, এর অর্থ দেশে প্রায় ৬.৬৩ কোটি ছোট সংস্থার মধ্যে বন্ধ হয়েছে ৫৭ লক্ষই। বহু সংস্থা বন্ধের কথা মানলেও এই শিল্পের সংগঠন ফিসমে, ফসমি ও ফ্যাকসি-র বক্তব্য, করোনাকালে কেন্দ্রের কিছু পদক্ষেপ শিল্পের একাংশের কাজে লেগেছে। তেমনই অনেকেই শর্তের গেরোয় সেই সুবিধার বাইরেও থেকে গিয়েছে।
এই অবস্থায় অন্যান্য সমস্যার সঙ্গে কাঁচামালের বিপুল মূল্যবৃদ্ধি এই শিল্পের মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে বলে দাবি ফসমি-র প্রেসিডেন্ট বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য ও ফ্যাকসি-র প্রেসিডেন্ট হিতাংশু গুহের। ফ্যাকসির হিসাবে, শুধু ইস্পাতের দামই ২০১৯-২০ সালের চেয়ে ২০২০-২১ সালে বেড়েছে প্রায় ২৫০%! তাঁদের আশা, বাজেটে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দিশা মিলবে। সেই সঙ্গে তিন সংগঠনই প্রাপ্য বকেয়া ঠিক সময়ে মেটানো, নিয়ম মেনে যথাযথ ভাবে সরকারি দফতর ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় এমএসএমই যাতে বরাত পায় তা নিশ্চিত করা, ঋণের পথ আরও সুগম করার মতো পদক্ষেপ করতে কেন্দ্রকে আর্জি জানিয়েছে।