sheikh hasina

ভারতীয় শিল্পপতিদের লগ্নি করতে ডাক শেখ হাসিনার

হাসিনা বণিকসভা সিআইআই আয়োজিত এক বৈঠকে এ দেশের বাছাই করা শিল্পপতিদের মুখোমুখি হয়ে চট্টগ্রামের ওই আর্থিক অঞ্চলে লগ্নির ডাক দেন তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৪৫
Share:

বাংলাদেশে লগ্নির ডাক শেখ হাসিনার।

বাংলাদেশের পরিকাঠামোয় শিল্পপতি গৌতম আদানি বড় মাপের লগ্নি করতে পারেন। সে দেশের প্রশাসনের সঙ্গে আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেডের-এর চুক্তিও হয়েছে। খবর বাংলাদেশ সরকারি সূত্রের। চট্টগ্রামের মীরসরাইতে ভারতীয় শিল্পপতিদের লগ্নির জন্য একটি ‘ইন্ডিয়ান ইকনমিক জ়োন’ (ভারতীয় আর্থিক অঞ্চল) তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে শেখ হাসিনার সরকার। সূত্র বলছে, সে দেশের সমুদ্র বন্দরের পাশাপাশি ওই আর্থিক অঞ্চলেও পুঁজি ঢালতে পারে আদানিরা।

Advertisement

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের প্রথম দিনই (সোমবার) আদানি তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে জানান, ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের আগে ঝাড়খণ্ডে ১৬০০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পড়শি দেশে বিদ্যুৎ রফতানি শুরু করবেন। আজ হাসিনা বণিকসভা সিআইআই আয়োজিত এক বৈঠকে এ দেশের বাছাই করা শিল্পপতিদের মুখোমুখি হয়ে চট্টগ্রামের ওই আর্থিক অঞ্চলে লগ্নির ডাক দেন তাঁদের। প্রায় ৮৫৭ একর জমিতে যা গড়তে ১০০০ কোটি টাকা খরচ হওয়ার কথা। আদানির সংস্থা তৈরি করবে এটি। ভারত সরকারের দেওয়া ঋণের অর্থে কাজ হবে। হাসিনা জানিয়েছেন, ভারতীয় লগ্নিকারীদের জন্য মংলাতে আর একটি বিশেষ আর্থিক অঞ্চল তৈরির পরিকল্পনাও হচ্ছে।

বহু দিন ধরেই বাংলাদেশ সরকার এ দেশের শিল্পপতিদের বোঝানোর চেষ্টা করছে, গুজরাত বা তামিলনাড়ুর কারখানা থেকে উত্তর-পূর্বে পণ্য পাঠানোর বদলে বাংলাদেশে কারখানা গড়ে সেখান থেকে পণ্য পাঠানো সহজ। পরিবহণ খরচ কম। আজ হাসিনাও বলেন, ভারতীয় শিল্পপতিরা বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন করে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে রফতানি করতে পারেন। তাঁদের অবস্থান এমনই যে সেই পণ্য নেপাল, ভুটান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাকি দেশগুলিতেও পাঠানো যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ভারতের পাল্টা বার্তা, বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কার বদলে উত্তর-পূর্ব থেকেই চা কিনুক।

Advertisement

ভারত-বাংলাদেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ বছরেই দু’দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা ‘সার্বিক আর্থিক বোঝাপড়া চুক্তি’ নিয়ে দর কষাকষি শুরু হবে। তা সম্পূর্ণ হবে বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের শ্রেণিতে উত্তরণের আগে। দু’দেশের প্রাথমিক সমীক্ষায় স্পষ্ট, এতে লাভবান হবে দু’পক্ষই। ভারত ইতিমধ্যেই এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের পণ্য রফতানির বৃহত্তম ঠিকানা হতে চলেছে। চুক্তি হলে রফতানি দ্বিগুণ হবে। বাংলাদেশের জিডিপি ২% বিন্দু বাড়বে। বাংলাদেশে ভারতের রফতানি বাড়াতে, এখানকার যে ৪১৫টি পণ্যে তারা সর্বোচ্চ ২৫% আমদানি শুল্ক চাপায়, তা কমানোর দাবি তুলবে নয়াদিল্লি।

ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বাংলাদেশ দিয়ে উত্তর-পূর্বে পণ্য নিতে হাসিনা সরকার নয়াদিল্লিকে চট্টগ্রাম বন্দর ও খুলনার মংলা বন্দর ব্যবহারের খাতায়-কলমে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে এ নিয়ে টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ ছিল ভারতের। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহণ শেষ। দ্রুত কাজ চালু করতে হবে। এই ব্যবস্থায় জাহাজে করে ভারতীয় পণ্য মংলা বা চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে যাওয়া হবে। তার পরে তা ট্রাকে তুলে বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে সড়ক পথে ত্রিপুরার আখাউড়া বা মেঘালয় সীমান্তের তামাবিলে যাবে। ভারতের বার্তা, এই ব্যবস্থায় পণ্য পাঠাতে পারে বাংলাদেশও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement