আশঙ্কার ছবি। ইয়েমেনের রাস্তায় ট্যাঙ্ক। ছবি: এএফপি।
টানা সাত দিন পড়ার পরে সেনসেক্স উঠল ঠিকই। কিন্তু নামমাত্র। ১.০৬ পয়েন্ট। কারণ, শুক্রবারও শেয়ার বাজারের উপর ছায়া ফেলল ইয়েমেনে সৌদি যুদ্ধবিমানের বোমাবর্ষণ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একে ঘরের মাঠে তেমন সংস্কারের ঝোড়ো ইনিংসের দেখা নেই। তার উপর এ বার পশ্চিম এশিয়ায় অশান্তির জেরে তেলের দাম দ্রুত বাড়তে শুরু করলে, সেই ধাক্কা সামাল দেওয়া ভারতীয় অর্থনীতির পক্ষে কঠিন হবে। বাড়বে রাজকোষ ঘাটতি। রাশ টানা শক্ত হবে চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতিতেও। এই অশনি সংকেতেই বাজার এখন অশান্ত বলে তাঁদের অভিমত। এ হেন অনিশ্চয়তার মধ্যে শেয়ার বাজারের দ্রুত ওঠা-নামাও খুব স্বাভাবিক বলে মনে করছেন তাঁরা।
অনিশ্চয়তার এই একই ছবি দেখা গিয়েছে সোনা এবং বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের বাজারেও। সাধারণত শেয়ার বাজার টালমাটাল হলে, লগ্নির গন্তব্য হিসেবে সোনার কদর বাড়ে। সেই সূত্র মিলিয়ে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দর বেড়েছে। কিন্তু স্থানীয় চাহিদা সে ভাবে না-থাকায় কলকাতায় শুক্রবার সেই ছবি ছিল উল্টো। প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনার দর কমেছে ২১০ টাকা। চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে হাঁটছে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের বাজারও। বৃহস্পতিবারই ডলারের সাপেক্ষে ৩৪ পয়সা পড়েছিল টাকা। কিন্তু এ দিন ডলারের দামই ২৬ পয়সা কমেছে। তার দাম হয়েছে ৬২.৪১ টাকা।
বিমান হানার খবরে বৃহস্পতিবার একলপ্তে ৬৫৪ পয়েন্ট খুইয়েছিল সেনসেক্স। এ দিন ওই ভাবে তা নড়াচড়া করেনি। কিন্তু দিনভর তাতে জারি থেকেছে ওঠাপড়া। এক সময় তা আগের দিনের তুলনায় ১৯০ পয়েন্ট বেড়ে হয় ২৭,৬৯৪.৪১ অঙ্ক। কিন্তু তারপর লগ্নিকারীরা মুনাফার টাকা তুলে নিতে শেয়ার বিক্রি শুরু করলে, সূচক নেমে আসে। থিতু হয় ২৭,৪৫৮.৬৪ পয়েন্টে।
খোদ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও এ দিন বলেছেন, ‘‘আমরা অনিশ্চিত সময়ের মধ্যে দিয়ে চলছি। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই অবস্থা দ্রুত কাটবে। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম স্থিতিশীল হবে।’’
বিএনকে ক্যাপিটাল মার্কেটসের এমডি অজিত খান্ডেলওয়াল বলেন, ‘‘অনিশ্চিত বাজারে লগ্নিকারীরা বেশি দিন শেয়ার রাখতে সহস পান না। দাম সামান্য বাড়লেই তা বেচে দেন। এখন সেটাই ঘটছে।’’ তবে বাজার থেকে টাকা তুলে নেওয়া বহু লগ্নিকারী নতুন অর্থবর্ষে সেখানে ফিরে এলে, বাজার ফের চাঙ্গা হবে বলে তাঁর আশা। তবে তার আগে আরও কিছুটা পতনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি।