সূচক পড়ে গিয়েছিল বাজেট পেশের দিনই। ৫ জুলাই, শুক্রবার। কর্পোরেট করের সুবিধা থেকে বহু ভাল সংস্থার বাদ পড়া, সংস্থার নিজের শেয়ার কিনে বাজার থেকে ফেরানোর উপরে কর, পেট্রল-ডিজেলে বাড়তি শুল্ক বা অতি ধনীদের আয়ে সারচার্জের মতো অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বেশ কিছু প্রস্তাবে মুখভার হয়েছিল তার। সেই ধাক্কা এখনও কাটেনি। বিশেষত অতি ধনীদের সারচার্জ বিদেশি লগ্নিকারীদের উপর প্রযোজ্য হবে কি না, সেই বিষয়টি নির্মলা এখনও স্পষ্ট না করায়। তার উপরে গত কয়েক মাসের মতো জুনেও ফের গাড়ির বিক্রি কমেছে। ফলে আরও পরিষ্কার হয়েছে দেশে চাহিদার অভাব। যা অর্থনীতির চাঙ্গা হওয়ার পথে অন্যতম বাধা। ফলে সব মিলিয়ে উদ্বেগে লগ্নিকারীরা। কিছুটা সতর্কও।
সোমবার সেনসেক্স নেমেছিল প্রায় ৭৯৩ পয়েন্ট, যা চলতি বছরে এ যাবৎ এক দিনে সবচেয়ে বড় পতন। তাতে মদত জুগিয়েছে, বাজেটে অর্থনীতি চাঙ্গা করার তেমন দিশা না থাকা, ভোগ্যপণ্যের চাহিদার পতন, বিলম্বিত এবং অপ্রতুল বর্ষা ইত্যাদি। যে সমস্যাগুলো বাজারের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, তার সমাধান দ্রুত হওয়ার নয়। তাই সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতেও বেশ অস্থির ছিল সূচক। যে সেনসেক্স বাজেটের দিন সকালেও ৪০ হাজার ছুঁয়েছিল, তা গত শুক্রবার শেষ বেলায় থিতু হয় ৩৮,৭৩৬ অঙ্কে।
ভোগ্যপণ্যের চাহিদাতেও ভাটা স্পষ্ট। চাহিদা কমায় উৎপাদন ছাঁটতে বাধ্য হয়েছে মারুতি সুজুকি। গাড়ি বিক্রি কমায় চাহিদা কমছে ইস্পাত, রং, প্লাস্টিক এবং নানা যন্ত্রাংশেরও।
পতনে মদত
ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বাজেটে তেমন কোনও দিশা বা সরকারের তরফে খরচের পরিকল্পনা চোখে না পড়া। ভোগ্যপণ্যের চাহিদায় পতন। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে ক্রমাগত কমছে গাড়ি বিক্রি। উৎপাদন ছাঁটতে বাধ্য হচ্ছে অনেকে। বিলম্বিত ও অপ্রতুল বর্ষা। যার জেরে কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে সংস্থাগুলির আর্থিক ফলাফল নিয়ে দুশ্চিন্তা। অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার অন্যতম শর্ত যে লাভ-ক্ষতির হিসেব।
পাশাপাশি খুচরো মূল্যবৃদ্ধিও এখন মাথাব্যথার কারণ। জুনে যে হার স্পর্শ করেছে ৩.১৮%, যা ছ’মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
এ বারের বাজেটে দু’-একটা ভাল প্রস্তাবও আছে। যেমন, এনপিএসে করছাড়। আগের নিয়মে, মেয়াদ শেষে এই অ্যাকাউন্ট থেকে ৬০% পর্যন্ত তোলা যায়, যার ৪০% থাকে করমুক্ত। বাজেট প্রস্তাব, ৬০ শতাংশই করমুক্ত।
(মতামত ব্যক্তিগত)