প্রতীকী ছবি।
শেয়ার বাজার নিস্তেজ ছিল গত সপ্তাহে। পাঁচটির মধ্যে চার দিনেই সেনসেক্স খুইয়েছে মোট ৩৮৯ পয়েন্ট। তার আগের সপ্তাহেও কিছুটা জমি হারিয়েছিল। তবু সূচকটি এখনও সাড়ে ৫২ হাজারের উপরে। রেকর্ড উচ্চতা থেকে মাত্র ৫৭২ পয়েন্ট পিছনে। মানে, যথেষ্ট চাঙ্গা। আসলে ভাল দামের সুযোগ নিতে যাঁরা শেয়ার বেচছেন, তাঁদের অনেকে অন্যত্র লগ্নি ততটা লাভজনক না-হওয়ায় ফের শেয়ারেই বিক্রির টাকা ঢালছেন। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম চার মাসেই (এপ্রিল-জুলাই) বাজারে লগ্নিকারীদের সম্পদ বেড়েছে ৩১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি।
তবে অর্থনীতির বর্তমান অবস্থায় সূচকের এত উঁচুতে থাকার কথা নয়। তাই বাজারের প্রধান চ্যালেঞ্জ আগামী দিনেও এই উচ্চতা ধরে রাখা। যে কারণে চাঙ্গা থাকার দাওয়াই খুঁজতে মরিয়া সে। যে দাওয়াই কিছু শিল্পে প্রাণ ফেরার লক্ষণ, বিক্রিবাটা বৃদ্ধির ইঙ্গিত আর তার জোরে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর আশা। সেই আশায় বাজার তার শক্তি ধরে রাখছে।
উঁচু বাজারের সুযোগে চাঙ্গা নতুন ইসুর (যে শেয়ার বাজারে প্রথমবার বেচে টাকা তুলছে কোনও সংস্থা/আইপিও) বাজারও। জ়োম্যাটোর পরে আইপিও-তে সফল গ্লেনমার্ক লাইফ সায়েন্সেস। প্রয়োজনের চেয়ে ৪৪.১৭ গুণ আর্জি জমা পড়েছে তাদের শেয়ার কিনতে। লাভের আশায় বহু মানুষই ঝুঁকছেন ভাল নতুন ইসুর দিকে। এপ্রিল-জুলাইয়ে এ পথে ১২টি সংস্থা মোট ২৭,০০০ কোটি টাকা তুলেছে।
লগ্নির জগতে খবর
জুনে দেশের পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বেড়েছে ৮.৯%। দেখতে ভাল লাগলেও, এটা হয়েছে গত বছরের নিচু ভিতের সঙ্গে তুলনা করার দরুন। এপ্রিল-জুনের আর্থিক ফলেও ভাল-মন্দের পাল্লা প্রায় সমান ভারী। আইওসি-র নিট মুনাফা ১৯১১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৯৪১ কোটি। গত বছর ১৬৫৬ কোটি লোকসান বওয়া সান ফার্মার নিট লাভ ১৪৪৪ কোটি। টেক মহিন্দ্রার ক্ষেত্রে তা ১৩৫৩ কোটি টাকা। কানাড়া ব্যাঙ্ক, ইউকো ব্যাঙ্ক এবং ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের বেড়ে পৌঁছেছে যথাক্রমে ১১৭৭ কোটি, ১০২ কোটি, ১০১৬ কোটিতে। তবে বন্ধন ব্যাঙ্কের নিট লাভ কমেছে ৩২%, এলআইসি হাউসিং ফিনান্সের ৮১%, ব্রিটানিয়ার ২৯%। ইন্ডিগোর লোকসান পৌঁছেছে ৩১৭৪ কোটিতে।
এখন চলছে সংস্থার বার্ষিক সভা তথা ডিভিডেন্ড প্রদানের মরসুম। ডিভিডেন্ড করযোগ্য। ফলে সেই টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকল কি না সজাগ থাকতে হবে লগ্নিকারীদের। আয়কর রিটার্নেও তা দেখাতে হবে।
গত সপ্তাহে ১০ বছর মেয়াদি বন্ড ইল্ড উঠে এসেছে ৬.২০ শতাংশে। চিন্তায় পড়েছেন বন্ড এবং বন্ড ফান্ডের লগ্নিকারীরা। এর ফলে ঋণে সুদ বাড়ায় সরকারেরও খরচ বাড়বে।
(মতামত ব্যক্তিগত)