প্রতীকী ছবি।
এক দিকে দেশের অন্দরে কাহিল চাহিদা ও ক্রমশ নেতিয়ে পড়া অর্থনীতি। অন্য দিকে বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়ানোর আশঙ্কা। শুক্রবার এই জোড়া ফলায় কার্যত বিদ্ধ হল ভারতের লগ্নিকারী ও শিল্প মহল। সকালে লেনদেন শুরু হওয়ার পরেই ধস নামে শেয়ার বাজারে। দিনভর পতনের হাত ধরে ১৪৪৮.৩৭ পয়েন্ট তলিয়ে যায় সেনসেক্স। লগ্নিকারীরা হারান প্রায় ৫.৫ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ।
আর সন্ধ্যা নামতে না-নামতেই সরকারি পরিসংখ্যান জানায়, চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রায় সাত বছরের সব থেকে নীচে পিছলে গিয়েছে বৃদ্ধির হার। দাঁড়িয়েছে ৪.৭ শতাংশে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান বাড়াতে যে-ক্ষেত্রে উৎপাদন বেশি হওয়া জরুরি, সেই কলকারখানায় উৎপাদন (ম্যানুফ্যাকচারিং) বাড়া দূরের কথা, ফের সঙ্কুচিত হয়েছে।
বৃদ্ধির হার সামনে আসতেই ফের মোদী সরকারকে লক্ষ্য করে তোপ দেগেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। বলেছেন, অর্থনীতিতে মন দেওয়ার বদলে এই সরকার রাজনৈতিক ও সামাজিক লক্ষ্য পূরণের দিকে অনেক বেশি নজর দেয়। তাই এই অবস্থা। যদিও একই সঙ্গে রাজনের দাবি, অর্থনীতির প্রধান সমস্যাগুলিতে নজর দিলে ভারতের বৃদ্ধির রথ এখনও ঠিক দিকে ছোটার ক্ষমতা রাখে। তা হলে কেন তার এই দশা? রাজনের জবাব, ‘‘এটা একটা দুঃখের গল্প। আমার মনে হয়, খুব সাম্প্রতিক কালে এটা রাজনীতি।’’
কেন্দ্রের তরফে আর্থিক বিষয়ক সচিব অতনু চক্রবর্তীর অবশ্য যুক্তি, ‘‘অর্থনীতির হাল আর খারাপ হবে না। এ বার ঘুরে দাঁড়ানোর পালা।’’ সরকারি তথ্য বলেছে, জানুয়ারিতে আটটি প্রধান পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উৎপাদন ২.২% বেড়েছে। যা ডিসেম্বরে ছিল ২.১ শতাংশ। অতনুর দাবি, ভবিষ্যতে কারখানার উৎপাদনও বাড়বে।
বৃদ্ধি নিয়ে হতাশা ঘিরে ধরার আগে অবশ্য শেয়ার বাজারের লগ্নিকারীরা করোনা-আতঙ্ক প্রত্যক্ষ করে ফেলেছেন। ধসের জেরে এ দিন সেনসেক্স আবার ফিরেছে ৩৮ হাজারের ঘরে। দাঁড়িয়েছে ৩৮,২৯৭.২৯ অঙ্কে। এই নিয়ে টানা ছ’দিনে সূচক পড়ল ৩০২৬ পয়েন্ট।