ফাইল চিত্র।
অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ। তার জেরে মাঝে মধ্যে কিছুটা সংশোধন এলেও, ২০২১ সালে একের পর এক রেকর্ড গড়েছে ভারতীয় শেয়ার বাজার। সর্বোচ্চ অবস্থানের চেয়ে প্রায় ৪০০০ পয়েন্ট নীচে থামলেও, মোটের উপরে চাঙ্গা মেজাজেই বছরটা শেষ করল সেনসেক্স। শুক্রবার ৪৫৯.৫০ পয়েন্ট উঠে ৫৮,২৫৩.৮২ অঙ্কে দৌড় শেষ করেছে সূচকটি। নিফ্টি ১৫০.১০ পয়েন্ট উঠে থেমেছে ১৭,৩৫৪.০৫ অঙ্কে। বাজার বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি ও করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থাকলেও তাকে মোকাবিলা করার পরিকাঠামো এখন অনেকটাই তৈরি। ফলে করোনা যখন বাজারে প্রথম বার ঝাপটা দিয়েছিল, নতুন বছরে তখনকার মতো আতঙ্ক ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই।
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেনসেক্স ছিল ৪৭,৭৫১.৩৩ পয়েন্টে। তার পরে এক বছরে তা নিট উঠেছে ১০,৫০২.৪৯ পয়েন্ট, ২১.৯৯%। নিফ্টি ৩৩৭২.৩ পয়েন্ট বা ২৪.১১%। লগ্নিকারীদের সম্পদ বেড়েছে মোট ৭৮ লক্ষ কোটি টাকা। গত ১৯ অক্টোবর লেনদেনের মধ্যবর্তী সময়ে ৬২,২৪৫.৪৩ পয়েন্টে পৌঁছেছিল সেনসেক্স। এখন পর্যন্ত যা রেকর্ড।
২০২১ সালের প্রথমার্ধে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের উদ্বেগ ছিল। তবু প্রতিষেধক প্রয়োগের হার বৃদ্ধি এবং মন্দার খাদ থেকে জিডিপি ঘুরে দাঁড়ানোর উপরে নির্ভর করে ধারাবাহিক ভাবে বেড়েছিল বাজার। আবার বছরের দ্বিতীয়ার্ধটা মূলত ছিল বিভিন্ন সংস্থার বাজারে প্রথম শেয়ার (আইপিও) ছেড়ে টাকা তোলার। যার হাত ধরেও বিপুল মূলধন ঢুকেছে বাজারে। উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে ছোট ও মাঝারি মাপের শেয়ারগুলিও। সব মিলিয়েই এই উত্থান।
কিন্তু এখন অর্থনীতির সামনে চোখ রাঙাচ্ছে অতিমারির তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। সে ক্ষেত্রে নতুন বছরে বাজার কেমন থাকবে? বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, ‘‘এখন ভারত, আমেরিকা সহ একাধিক বৃহৎ অর্থনীতির ভিত এক বছর আগের তুলনায় মজবুত। করোনা সমস্যা ঠিকই, তবে তা মোকাবিলার পরিকাঠামো অনেকটাই তৈরি। ফলে আতঙ্ক ছড়ানোর আশঙ্কা কম।’’ তাঁর বক্তব্য, সংক্রমণ কমলে অর্থনীতি আরও মাথা তুলবে। বাড়বে বাজার। রেকর্ড উচুঁ বাজারে যথেষ্ট সংশোধনও হয়েছে বলে মত তাঁর। এইচডিএফসি সিকিউরিটিজ়ের এমডি-সিইও ধীরাজ রেলির মতে, নতুন বছরে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়াতে পারে। ফলে সূচক গত বছরের মতো বাড়বে না। তবে রিটার্ন সন্তোষজনক হবে।