BSE SENSEX

সুদ না-কমলেও খুশি বাজার

ভয় ছিল, বর্তমান আর্থিক সঙ্কটের আবহে সুদ না-কমলে ফের হুড়মুড়িয়ে পড়বে না তো বাজার! কারণ, চাহিদা ও শিল্পের লগ্নি বাড়াতে সেই দাবি এখনও বহাল। তবে শেষমেষ হতাশ হয়নি সেনসেক্স।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ০৭:৫৫
Share:

ফাইল চিত্র।

মূল্যবৃদ্ধি মাথা তোলায় অনুমান ছিল, এই দফায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আর সুদ কমাবে না। গত সপ্তাহে সেটাই সত্যি হল। সেই সঙ্গে ঋণনীতি ঘোষণায় তারা স্পষ্ট জানাল, আরও মাথা তুলতে পারে মূল্যবৃদ্ধি। প্রথমার্ধে তো বটেই, গোটা অর্থবর্ষেও মোট জাতীয় উৎপাদন শূন্যের নীচে থাকতে পারে। ভয় ছিল, বর্তমান আর্থিক সঙ্কটের আবহে সুদ না-কমলে ফের হুড়মুড়িয়ে পড়বে না তো বাজার! কারণ, চাহিদা ও শিল্পের লগ্নি বাড়াতে সেই দাবি এখনও বহাল। তবে শেষমেষ হতাশ হয়নি সেনসেক্স।

Advertisement

প্রত্যক্ষ ভাবে না-হলেও, ঘুরপথে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বাজারে টাকার জোগান বাড়ানোর ব্যবস্থা করাই মনে হয় এর কারণ। যার মধ্যে আছে, সোনায় বেশি ঋণের সুযোগ, সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত ঋণ ও শিল্পের ধার পুনর্গঠনের সুবিধা, নাবার্ড, এনবিএফসি, আবাসন শিল্পকে পুঁজির জোগান ইত্যাদি। যে কারণে বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ঋণনীতি ঘোষণার দিন ৩৬২ পয়েন্ট বাড়ে সেনসেক্স। ফের ৩৮ হাজারে পেরিয়ে পৌঁছয় ৩৮,০২৫ অঙ্কে। উত্থান জারি থাকে পরের দিনও।

অথচ সপ্তাহের প্রথম ভাগে উত্তালই ছিল শেয়ার সূচক। তার আগে সপ্তাহের শেষে জানা গিয়েছিল জুনে দেশের মূল আটটি পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন ১৫% সঙ্কুচিত হওয়ার তথ্য। এর প্রভাবে গত সোমবার সেনসেক্স নামে ৬৬৭ পয়েন্ট। দাম এতটা পড়ায় লগ্নিকারীরা শেয়ার কিনতে নামলে পরের দিন তা ওঠে ৭৪৮ পয়েন্ট। বাজার আরও চাঙ্গা হয়েছে ঋণনীতি ঘোষণার পরে।

Advertisement

গত সপ্তাহে যা হল

• রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট অপরিবর্তিত (৪%)।

• সোনা জমা রেখে সর্বাধিক ঋণ বেড়ে ৯০%।

• বকেয়া ব্যক্তিগত ও শিল্প ঋণ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত।

• রেকর্ড উচ্চতায় সোনা ও রুপো। জিএসটি বাদে ১০ গ্রাম পাকা সোনা ৫৬,৯৬০ টাকা। ১ কেজি রুপোর বাট ৭৫,০৩০।

• এপ্রিল-জুনে স্মার্টফোনের বিক্রি কমেছে ৫১%।

• এপ্রিল-জুনে বাটার লোকসান ১০০ কোটি টাকা। এক্সাইড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সামগ্রিক ক্ষতি ১২.৫৬ কোটি। ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার বেড়ে ৮৪৪ কোটি।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ অপরিবর্তিত রাখায় আশা করা যায়, জমায় সুদ আর কমবে না এখন। আশা, অক্টোবর-ডিসেম্বরে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতেও হেরফের হবে না সুদের। তবে দেশের বৃদ্ধির হারকে টেনে তুলতে একটু বড় মেয়াদে আরবিআই যে ফের সুদ কমানোর পথে হাঁটতে পারে তার ইঙ্গিত আছে ঋণনীতিতে।

বিশ্ব জুড়ে অর্থনীতির অনিশ্চয়তা ও শেয়ারের অস্থিরতা সুগম করেছে সোনা, রুপোর রেকর্ড দাম ছোঁয়ার পথ। সুরক্ষা পেতে শুধু লগ্নিকারীরাই নন, হুড়মুড়িয়ে সোনা কিনছে বিভিন্ন দেশের সরকারও। ফলে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সোনার খুচরো চাহিদা কমা সত্ত্বেও দাম লাফিয়ে বাড়ছে। লগ্নিকারীদের জন্য এটা সুখের। কিন্তু তা ঘুম কেড়েছে বিবাহযোগ্য সন্তানের বাবা-মায়েদের।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement