ফাইল চিত্র।
অবশেষে ৫৬ হাজারের ঘরে থিতু হল সেনসেক্স। শুক্রবার দৌড় শেষ করল ৫৬,১২৫ অঙ্কে। ফলে শুধু অগস্টেই তিনটি মাইলফলক পেরোল সূচকটি। জুলাই শেষ হয়েছিল ৫২,৫৮৭ অঙ্কে। তার পর থেকে এক মাসে তার লাফ প্রায় ৩৫৩৮। গত ৩ অগস্ট সেনসেক্স ঢুকে পড়ে ৫৩ হাজারের ঘরে (তবে এই প্রথম নয়, আগেও এক বার উঠেছিল)। পরের দিন, ৪ অগস্ট তা পেরিয়ে যায় ৫৪ হাজার। কিছুটা ওঠানামার মধ্যে দিয়ে হেঁটে ১৩ অগস্ট পার করে ৫৫ হাজার আর ২৭ অগস্ট ৫৬ হাজার। গত বছর মার্চে ২৬ হাজারের নীচে তলিয়ে যাওয়া শেয়ার বাজার মাত্র ১৭ মাস সময় নিল দ্বিগুণ হতে।
শুক্রবার নিফ্টি বন্ধ হয় ১৬,৭০৫ অঙ্কে। তারও এমন উঁচু শিখর জয় এই প্রথম। ১৭ মাসে ৮০০০ থেকে দ্বিগুণ হয়ে সে-ও পৌঁছেছে ১৬ হাজারে। গত সপ্তাহে সেনসেক্স উঠেছে মোট ৭৯৬ পয়েন্ট এবং নিফ্টি ২৫৫। তবে বড় দুই সূচকের উত্থান অব্যাহত থাকলেও, ছোট এবং মাঝারি শেয়ারগুলির দাম নেমে ভিতরে ভিতরে কিছুটা সংশোধন হয়ে গিয়েছে।
গত সপ্তাহে কেন্দ্র ঘোষণা করেছে, সরকারি সম্পদ কিছুটা সময়ের জন্য বেসরকারি সংস্থাকে ব্যবহার করতে দিয়ে অর্থ সংগ্রহ করবে তারা। রাস্তা, রেল, গ্যাস পাইপলাইন, টেলিকম টাওয়ার, অপটিক ফাইবার, বন্দর, স্টেডিয়ামের মতো অনেক কিছুই এ ভাবে খাটানো হবে চার বছরে প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যে। সরকারের হাতে টাকা আসার পথ খোলায় শেয়ার বাজার খুশি বলেই মনে হয়েছে। একাংশের মতে, এতে রাজকোষ ঘাটতি কম থাকবে। অর্থনীতির উন্নতির জন্য সরকার বেশি খরচ করতে পারবে। তবে বিরোধীদের তোপ, এমন পদক্ষেপ বেসরকারিকরণেরই কৌশল। মানুষের ভরসা কাড়ছে সরকার। একই কারণে খুশি নয় বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীরাও।
শেয়ারে লগ্নিকারীরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন এসবিআইয়ের সমীক্ষা দেখেও। যেখানে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে জিডিপি বাড়তে পারে ১৮.৫%। যদিও এতটা উঁচু দেখানোর কারণ, গত বছর একই সময়ের নিচু ভিতের সঙ্গে পরিসংখ্যানের তুলনা।
শেয়ার বাজারের এ হেন উত্থানে বড় লাভের মুখ দেখেছেন লগ্নিকারীরা। ফলে দ্রুত বেড়েছে তাঁদের সংখ্যা। ফান্ডের মাধ্যমেও বিরাট মাপের লগ্নি ঢুকছে বাজারে। যা শক্তি জোগাচ্ছে সূচককে। তার নজিরবিহীন উত্থানের সুযোগ নিতে যেমন বাজারে প্রথম শেয়ার ছেড়ে অনেক সংস্থা তহবিল জোগাড় করছে, তেমনই বিভিন্ন মিউচুয়াল ফান্ড হাজির হচ্ছে নানা রকম প্রকল্প নিয়ে। এমন রমরমা অবস্থার মধ্যে গত সপ্তাহে বন্ধ হওয়া নতুন ফান্ড প্রকল্প এসবিআই ব্যালান্সড অ্যাডভান্টেজ ফান্ড সংগ্রহ করেছে ১৪,৫০০ কোটি টাকার লগ্নি, যা এই শিল্পে সর্বকালীন রেকর্ড। এর আগে বাজারে আসা আইসিআইসিআই প্রুডেন্সিয়াল ফ্লেক্সিক্যাপ ফান্ড পেয়েছিল ৯৫০০ কোটি টাকার লগ্নি।
ব্যাঙ্কের মেয়াদি আমানতে সুদ কমে আসায় অতিরিক্ত আয়ের সন্ধানে অনেকে ঝুঁকছেন ফান্ডের দিকে। ভাল আয়ের সুযোগ ছাড়াও এই ধরনের লগ্নিতে আছে কর খাতে নানা সুবিধা।
মতামত ব্যক্তিগত