প্রতীকী ছবি।
সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চিকিৎসা পরিকাঠামোর ছন্নছাড়া ছবিকে দূরে সরিয়ে রেখেই ফের চাঙ্গা ভারতের শেয়ার বাজার। সোম, মঙ্গলের পরে বুধবার সেনসেক্স উঠেছে আরও প্রায় ৭৯০ পয়েন্ট। আর এই লাগাতার উত্থানের জেরে আবার পৌঁছে গিয়েছে ৫০ হাজারের গণ্ডির কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, করোনার কালো মেঘের মধ্যে লগ্নিকারীদের সামনে আশার রুপোলি রেখা জানুয়ারি-মার্চ (গত অর্থবর্ষের শেষ তিন মাস) ত্রৈমাসিকে বিভিন্ন সংস্থার ভাল আর্থিক ফল। যাকে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর অন্যতম ধাপ মনে করছেন তাঁরা। তাই গত কয়েক সপ্তাহ নাগাড়ে পড়ার পরে আবার মাথা তুলছে সূচক। মহারাষ্ট্রে সংক্রমণের কমতে থাকা হারও লগ্নির আগ্রহ বাড়িয়েছে।
বাজার মহল জানাচ্ছে, যে সব সংস্থা ভাল মুনাফা করছে দু’হাতে সেগুলির শেয়ার কিনছেন লগ্নিকারীরা। যেমন, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, বজাজ ফিনসার্ভ, বজাজ ফিনান্স ইত্যাদির। বজাজ ফিনান্সের শেয়ার দর এ দিন ৮.৩২% বেড়েছে। তবে একাংশের মতে, আজ বৃহস্পতিবার আগাম লেনদেনের সেটলমেন্ট। হাতে না-থাকা সত্ত্বেও যে সব লগ্নিকারী শেয়ার বিক্রি করে রেখেছেন, তাঁদের এ দিন সেগুলি হস্তান্তর করতে হবে। ফলে তার আগে অনেকেই শেয়ার কিনতে নেমেছেন। তার উপরে তিন দিন ধরে ডলারের সাপেক্ষে বাড়ছে টাকার দাম। সূচকের উত্থানে জ্বালানি জুগিয়েছে এই দু’টি বিষয়ও।
রিলায়্যান্স সিকিউরিটিজ়ের পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান বিনোদ মোদীর দাবি, অতিমারির চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এই তিন দিনেই ৬ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বেড়েছে লগ্নিকারীদের শেয়ার সম্পদ। বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলছেন, ‘‘সূচককে ঠেলে তুলছে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির লগ্নি। যাঁরা প্রকৃত অর্থে লগ্নিকারী, তাঁরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আতঙ্কিত হননি। মার্চ ত্রৈমাসিকে সংস্থার ভাল ফলও উৎসাহ জুগিয়েছে।’’
যদিও ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখের মতে, ‘‘আমেরিকায় সরকার ত্রাণ প্রকল্প দিয়ে নগদের জোগান বাড়ানোয় তার একাংশ ভারতের শেয়ার বাজারে ঢুকছে ঠিকই। তবে উদ্বেগের বিষয় হল দেশের অর্থনীতির কোনও মৌলিক উন্নতি ছাড়াই সূচক উঠছে। ফলে অনেক সংস্থার শেয়ারের দাম যেখানে চড়েছে তাতে কৃত্রিমতা রয়েছে। সার্বিক ভাবে বাজার ঝুঁকিপূর্ণই।’’