ফাইল চিত্র।
এক লাফে ৬৮৯ পয়েন্ট বেড়ে শুক্রবার এই প্রথম ৪৮,৭৮২.৫১ অঙ্কে পৌঁছে গেল সেনসেক্স। নিফ্টি-ও নতুন রেকর্ড গড়ল ১৪,৩৪৭.২৫-এ পা রেখে। বাজার বিশেষজ্ঞদের দাবি, সূচকের যা হাবভাব, তাতে ৪৯ হাজার তো বটেই, তাকে ৫০ হাজারের চূড়োয় থিতু হতে দেখার জন্যও হয়তো খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের পূর্বাভাস ছিল, চলতি অর্থবর্ষে দেশের জিডিপি আগের বছরের চেয়ে সরাসরি কমতে পারে ৭.৭%। অনুমান মিলে গেলে ৪০ বছর পরে এই প্রথম বৃদ্ধির বদলে জিডিপির সঙ্কোচন দেখবে দেশ। তার উপরে রয়েছে রাজকোষ ঘাটতি সারা বছরের অনুমানের দ্বিগুণ হওয়া আশঙ্কা। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তা সত্ত্বেও কী করে ফের রেকর্ড গড়ল সূচক?
ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখের মতে, আসলে সঙ্কোচন প্রত্যাশিতই ছিল। প্রধান বিচার্য বিষয়, অতিমারির ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কি না। দেখা গেলে, কত দ্রুত। সেই ভরসাতেই লগ্নিকারী পুঁজি ঢালার মেজাজে থাকবেন, নতুবা নয়। যেমন, বিদেশি লগ্নিকারী আর্থিক সংস্থাগুলির ধারণা করোনা বিদায়ের পরে ভারতের অর্থনীতি সব থেকে তাড়াতাড়ি ছন্দে ফিরবে। তাই বিনিয়োগ করছে তারা।
তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের একাংশের প্রশ্ন, জিডিপি-র ৭.৭% কমার ইঙ্গিত থাকলে, তা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলা যাবে কী ভাবে? সরকারি খরচ তেমন না-বাড়ানোকে এ জন্য দায়ী করছেন অনেকেই। এ দিন খরচ বৃদ্ধির সওয়াল করেন আর্থিক উপদেষ্টা সংস্থা ডান অ্যান্ড ব্র্যাডস্ট্রিটের প্রধান অর্থনীতিবিদ (গ্লোবাল) অরুণ সিংহও। তার মতে, অনিশ্চিত সময়ে ওই খরচই ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও করোনাকালে সে আশা মেটেনি।
তবে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের দাবি, শিল্পের ছন্দে ফেরার লক্ষণ স্পষ্ট। উপদেষ্টা সংস্থা আইএইচএস মার্কিটের সমীক্ষায় পূর্বাভাস, আগামী অর্থবর্ষে ৮.৯% বৃদ্ধিতে ফিরতে পারে অর্থনীতি। বাজার মহল বলছে, করোনার টিকা জরুরি প্রয়োগের ছাড়পত্র মেলায় দ্রুত অর্থনীতির চাঙ্গা হওয়ার জমি মজবুত হচ্ছে। ভরসা পাচ্ছেন লগ্নিকারী। তারই মধ্যে মূল্যায়ন সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিংসের হুঁশিয়ারি, কেন্দ্রের পূর্বাভাস সত্যি হলে অর্থনীতির মাপ ১৩৪.৪০ লক্ষ কোটি টাকা কমবে। যার মানে, সরকারি কেনাকাটা হয়তো কিছুটা হবে, কিন্তু বাকি সব ক্ষেত্রে কমবে চাহিদা, লগ্নি, রফতানি এবং আমদানি।