গত জানুয়ারিতে দৌড় শুরু হয়েছিল ২৬,৫৯৫.৪৫ থেকে। বছর শেষ হল ৩৪,০৫৬.৮৩ অঙ্কে পৌঁছে। শুক্রবার, ২০১৭ সালের শেষ লেনদেনের দিনে সেনসেক্স ফের গড়ল নতুন নজির। ৫২.৮০ পয়েন্ট এগিয়ে ১০,৫৩০.৭০ অঙ্কের নতুন শিখরে পা রেখেছে আর এক সূচক নিফ্টিও।
ডলারে টাকার দামও বেড়েছে ২১ পয়সা। এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬৩.৮৭ টাকায়। গত চার মাসে টাকার এই দাম সর্বোচ্চ। আর গত এক বছরে তার উত্থান মোট ৪০৫ পয়সা।
চলতি বছরে লগ্নিকারীদের নিরাশ করেনি শেয়ার বাজার। সেখানে পুঁজি ঢেলে প্রায় ৪৫.৫০ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ বাড়িয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে বছর শেষে বিএসই-তে নথিভুক্ত সংস্থাগুলির মোট শেয়ার মূল্য ছুঁয়েছে ১,৫১,৭৩,৮৬৭ কোটি টাকা। সৌজন্যে বছরভর সেনসেক্সের ৭,৪৩০ পয়েন্ট উত্থান। ২০১৬ সালে যা ছিল ৫০৮.৯২।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, এই উত্থানে বড় কারণ জিএসটি। নতুন কর নিয়ে নানা মহলের বিস্তর অভিযোগ থাকলেও, দীর্ঘ মেয়াদে একে দেশের অর্থনীতির তুরুপের তাস বলে মনে করেছেন লগ্নিকারীরা। এমনকী মিরে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সিইও স্বরূপ মহান্তি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে জিএসটি-র সমস্যাগুলি মিটে যাবে। তখন সংস্থাগুলি এর সুফল পুরোপুরি টের পাবে। ফলে আরও উঠবে বাজার।’’
যদিও সূচকের টানা তেজী থাকা নিয়ে চিন্তিত স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ। তাঁর দাবি, ‘‘বাজার মূল্যবৃদ্ধি, শিল্পোৎপাদন, বৃদ্ধি, ঘাটতির মতো অর্থনীতির মৌলিক উপাদানে ভর করে ওঠানামা করছে না। এটা হচ্ছে মিউচুয়াল ফান্ডের টাকায়।’’
চলতি বছরে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির উপর নির্ভরশীল থাকার ‘দুর্নাম’ ঘুচেছে ভারতের বাজারের। ব্যাঙ্কের সুদ কমায় ঝোঁক বেড়েছে ফান্ডে লগ্নির। আর ফান্ডকে বাজারে তহবিল খাটাতেই হয়েছে। মূলত তাদের নগদেই চাঙ্গা থেকেছে সূচক। কিন্তু পারেখের মতে, এ ভাবে ওঠার মধ্যে ঝুঁকি নেই, বলা যাচ্ছে না। তবে তা মাপা মুশকিল।
বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দের পরামর্শ, শেয়ারে লগ্নির এই সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক নয়। তবে সে জন্য সূচকের প্রতি পতনে, দীর্ঘ মেয়াদে ও ভাল সংস্থার শেয়ারে লগ্নি জরুরি।