ফাইল চিত্র।
পতনের ধাক্কায় শেয়ার বাজার ফিরল বাজেটের আগের অবস্থানে!
করোনার উপর্যুপরি ঢেউয়ে ভারতীয় বাজার ধারাবাহিক ভাবেই অস্থির। এরই মধ্যে বাজেটের আগে আর্থিক সমীক্ষায় শক্তিশালী বৃদ্ধির পূর্বাভাস ও একগুচ্ছ প্রাপ্তির আশায় শক্তি ফিরছিল বাজারে। কিন্তু গত মঙ্গলবার সংসদে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট পেশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফের শুরু হল সংশোধন। আর এক সপ্তাহের মাথায় বাজার নামল বাজেটের ঠিক আগের জায়গায়।
জানুয়ারির ১৪ তারিখে সেনসেক্স ছিল ৬১,২৩৫.৩০ অঙ্কে। তার পরে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি, বিভিন্ন দেশে সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির পুঁজি প্রত্যাহারের জেরে ২৮ জানুয়ারি তা নামে ৫৭,২০০.২৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে ফের ৬০ হাজারের কাছাকাছি গেলেও, বাজেটের পরে তা পড়ছে। সোমবার ১০২৩.৬৩ পয়েন্ট হারিয়ে সেনসেক্স নেমেছে ৫৭,৬২১.১৯ অঙ্কে। নিফ্টি ৩০২.৭০ পয়েন্ট পড়ে হয়েছে ১৭,২১৩.৬০। এই তিন দিনে সেনসেক্স মোট ১৯৩৭.১৪ পয়েন্ট পড়েছে। লগ্নিকারীরা হারিয়েছেন ৫.৮২ লক্ষ কোটি টাকা।
বাজার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি ঘোষণা হওয়ার কথা। তাতে সুদ বৃদ্ধির কিছুটা হলেও সম্ভাবনা আছে। তার আগে লগ্নিকারীরা সতর্ক। পাশাপাশি, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি টানা ভারতে শেয়ার বেচছে। এ দিনও তারা বিক্রি করেছে নিট ১১৫৭.২৩ কোটি টাকার শেয়ার। এমনকি, দেশীয় লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও ১৩৭৬.৪৯ কোটির শেয়ার বিক্রি করেছে। বিশ্ব বাজার মোটামুটি সন্তোষজনক থাকা সত্ত্বেও এই বিষয়গুলি আরও অস্থির করেছে দেশের বাজারকে।
দেকো সিকিউরিটিজ়ের ডিরেক্টর আশিস নন্দীর বক্তব্য, ‘‘তেলের দাম যে ভাবে বাড়ছে, তার বিরূপ প্রভাব ভারতে পড়তে পারে। রাজনৈতিক কারণে আপাতত তেলের দাম বাড়ছে না। কিন্তু পাঁচ রাজ্যের ভোট মিটলে তা মাথা তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। যা মূল্যবৃদ্ধিকে আরও ঠেলে তুলবে বলেই ধারণা বাজার মহলের। তাদের আশঙ্কা, চলতি সপ্তাহে সুদ বাড়াতে পারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। সে ক্ষেত্রে মূলধন জোগাড়ের খরচ বাড়বে। ধাক্কা খাবে লগ্নি।’’ তবে
ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ সূচকের পড়ার পিছনে বাজেট নিয়ে হতাশাকে দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভবিষ্যৎ
নিয়ে বহু কিছু বললেও বাজেট স্বল্প
মেয়াদে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার রসদ দেয়নি। আশঙ্কা, সূচক আরও পড়বে।’’