—প্রতীকী ছবি।
আগের দিন সেনসেক্স ৮০ হাজারে পা রেখেও নেমে এসেছিল। লগ্নিকারীরা অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন তখন থেকেই। অবশেষে সূচক এই প্রথম থিতু হল ৮০ হাজারের ঘরে। বৃহস্পতিবার নজির গড়ে দিন শেষ করল ৮০,০৪৯.৬৭ অঙ্কে। উত্থান অবশ্য সামান্য (৬২.৮৭)। তবে মাঝখানের কয়েকটি পতন বাদ দিলে গত ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পর থেকে এক মাসে সেনসেক্স মোট ৭৯৭০.৬২ বেড়েছে। রেকর্ড গড়ে আর এক সূচক নিফ্টি হয়েছে ২৪,৩০২.১৫।
বিশেষজ্ঞ কমল পারেখ বাজারের এমন লাগামছাড়া দৌড়ে চিন্তিত। সাবধান করছেন সাধারণ লগ্নিকারীদের। তাঁর দাবি, ‘‘এই উত্থান কোনও যুক্তি মেনে হচ্ছে না। দেশি-বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি লাগাতার পুঁজি ঢালছে। সেই নগদের জোগানে ভর করে উঠছে সূচক। ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলির একাংশের আর্থিক অবস্থা খারাপ। বহু ছোট ব্যবসায়ী ব্যবসা বন্ধ করে শেয়ার বাজারে ঢুকেছেন। অনেক শেয়ারের চড়া দামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থার আয় বা মুনাফার সামঞ্জস্য নেই।’’ তাঁর বার্তা, শেয়ার দর বাড়ছে বলেই বাজারের স্বাস্থ্য ভাল হচ্ছে বলা যাবে না।
যদিও বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর মতে, আমেরিকায় দ্রুত সুদ কমার আশা এবং ভারতীয় অর্থনীতির আরও উন্নতির প্রত্যাশা সূচকের অন্যতম জ্বালানি। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকায় সুদ কমতে দেরি নেই বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সেখানকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। সেটা হলে, বিশ্ব জুড়ে শেয়ারে লগ্নি বাড়বে। আশা, এর বড় অংশ আসবে ভারতে। তার উপর এ দেশে উৎপাদন এবং পরিষেবা বৃদ্ধির গতি চড়া বলে জানিয়েছে পিএমআই সূচক। অর্থনীতির আরও অগ্রগতির ইঙ্গিতই টেনে আনছে বিদেশি লগ্নিকারীদের।’’ এ দিন এখানে ২৫৮৫.৭৫ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে তারা। দেশীয় সংস্থাগুলি ২৩৭৫.১৮ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, এই চড়া বাজারে ছোট লগ্নিকারীদের মুনাফা ঘরে তোলাই ভাল। লগ্নির জন্য অপেক্ষা করতে হবে গভীর পতনের।
বাজার যেখানে পৌঁছেছে, তাতে বাজেটের আগে আর বেশি উঠবে বলে মনে করেন না ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর বিনয় আগরওয়াল। বলছেন, ‘‘শেয়ার কেনা এবং বেচে লাভ ঘরে তোলা, দুই-ই চলছে। তাই তার গতি থাকবে ধীর। পরের রাস্তা নির্ভর করবে বাজেটের উপর।’’ বিনয়ের বার্তা, ভাল শেয়ারে ফাটকা না খেলে দীর্ঘ মেয়াদে লগ্নি মোটা লাভের সুযোগ খুলবে।