—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
জোড়া বিপর্যয় সোমবার কাঁপিয়ে দিল লগ্নিকারীদের। এক দিকে সেনসেক্স সূচকে ২২০০ পয়েন্টের বেশি ধস নামল। মুছে গেল তাঁদের ১৫ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ। গত শুক্রবারের পতন ধরলে টানা দু’দিনে ক্ষতির অঙ্ক ১৯ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। অন্য দিকে, আরও নীচে নেমে নজিরবিহীন তলানি ছুঁল টাকা। ৩৭ পয়সা উঠে এই প্রথম এক ডলারের দাম দাঁড়াল ৮৪.০৯ টাকায়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এ দিন বিশ্ব জুড়েই শেয়ার সূচক ছিল উত্তাল। দেশীয় সংস্থাগুলির পাশাপাশি বহু বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাও তড়িঘড়ি শেয়ার বেচে দিয়ে মুনাফা তুলে নিয়েছে।
সোমবার সেনসেক্স ফের নেমেছে ৭৮ হাজারের ঘরে। ২২২২.৫৫ পয়েন্ট (২.৭৪%) পড়ে থেমেছে ৭৮,৭৫৯.৪০ অঙ্কে। এর আগে ৪ জুন, লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন তা পড়েছিল ২৬৮৬.০৯ (৩.৩১%)। এ দিন নিফ্টি-ও নেমেছে ২৪,০৫৫.৬০-এ। পতন ৬৬২.১০ (২.৬৮%)। ভোটের ফলের দিন পড়েছিল ৫%।
বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী ও বিনয় আগরওয়াল বলছেন, এ দিন বাজারে ধস নামার কারণ তিনটি। এক, জাপানের সুদ বৃদ্ধি। দুই, আমেরিকা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে হলেও, শিল্পোৎপাদন, কর্মসংস্থানে ধাক্কার মতো সাম্প্রতিক তথ্যে সে দেশে তৈরি হওয়া মন্দার আশঙ্কা। তিন, পশ্চিম এশিয়ায় ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি। আশিসের কথায়, ‘‘বিদেশি লগ্নিকারীরা জাপান থেকে কম সুদে ঋণ নিয়ে ভারতে লগ্নি করত। কিন্তু তার হার বাড়ায় তাদের তহবিল জোগাড়ের খরচ বেড়েছে। বর্তমান ধারগুলি শোধ দিতেও বেশি অর্থ লাগবে। কার্যত উদ্বিগ্ন হয়েই তারা ভারত সহ বিভিন্ন দেশে শেয়ার বেচেছে।’’
বিনয়ের দাবি, ‘‘এ দিন এশিয়া, ইউরোপ-সহ বিশ্ব জুড়ে অস্থিরতা দেখা গিয়েছে বাজারে। তাতে শামিল হয়েছে ভারতও। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় এ দেশে সূচকের পতনের হার কম।’’ বিশেষজ্ঞ কমল পারেখের পরামর্শ, ‘‘বেশ কিছু দিন সূচকের উপরে চাপ থাকতে পারে। সাধারণ লগ্নিকারীদের তাই এখন দূরে থাকাই ভাল।’’
টাকার দামের তলিয়ে যাওয়া নিয়ে আশিসের বক্তব্য, ‘‘আজ ভারতীয় বাজারে বিদেশি লগ্নিকারীরা ১০,০০০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার বিক্রি করেছেন। তা ঘরে তুলতে ওই তহবিল ডলারে রূপান্তরিত করেছেন। মূলত ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির কারণেই দুর্বল হয়েছে ভারতীয় মুদ্রা।’’ জাপানের মুদ্রা ইয়েন-এর আরও শক্তিশালী হওয়াও টাকার পতনের আর একটি বড় কারণ বলেও জানান তিনি।