—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শেয়ার বাজারে ঝুঁকিপূর্ণ আগাম লেনদেনে অংশগ্রহণ করে হাত পুড়িয়েছেন বহু সাধারণ লগ্নিকারী। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি এবং কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। কিন্তু তাতে লগ্নিকারীদের সেই প্রবণতা কমানো যায়নি। এতে রাশ টানতে জুলাইয়ের বাজেটে এই ধরনের লেনদেনে করের হার বাড়িয়েছে সরকার। সূত্রের উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমের দাবি, এ বার সেবিও কিছু পদক্ষেপ করতে চলেছে।
ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে আগে থেকেই নির্ধারিত দামে শেয়ার কেনা বা বিক্রির চুক্তিকে বলা হয় আগাম লেনদেন। সেই পদ্ধতিতে শেয়ার কেনা বা বেচাকে বলা হয় ‘ফিউচার’ এবং ‘অপশন’। বাজারে ফাটকার প্রবণতা কমাতে সেবি এগুলির নিয়ম কঠোর করতে চলেছে।
সূত্রের খবর, এখন কমপক্ষে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে আগাম লেনদেনে অংশ নেওয়া যায়। তা বাড়িয়ে ১৫-২০ লক্ষ টাকা করতে চলেছে সেবি। আগাম লেনদেনের নিয়ম অনুযায়ী, মোট যত টাকার শেয়ার কেনা হবে, তার একটা অংশ ব্রোকারের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জের কাছে জমা রাখতে হয় লগ্নিকারীকে। লগ্নির অঙ্ক তিন বা চার গুণ করা হলে আগাম জমার অঙ্কও সেই অনুপাতে বাড়বে। ফলে লগ্নিকারীদের একাংশের পক্ষে এই লেনদেনে যোগ দেওয়া কঠিন হবে। সেবি ‘ডে ট্রেডিং’-এর ন্যূনতম অঙ্কও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। বাজার মহল থেকে বলা হয়, তা কার্যকর করতে সমস্যা হবে।
সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে আগাম লেনদেনের সর্বশেষ হিসাব (সেটলমেন্ট) হয়। অর্থাৎ, যিনি শেয়ার কিনবেন ওই দিন তাঁকে দাম মেটাতে হবে। যিনি শেয়ার বেচবেন, তাঁকে তা হস্তান্তর করতে হবে। এখন বিভিন্ন সূচকের ক্ষেত্রে ডেরিভেটিভের আগাম লেনদেনে সেটেলমেন্ট পৃথক দিনে হয়। যেমন, এনএসইতে নিফ্টির ক্ষেত্রে প্রতি বৃহস্পতিবার, ব্যাঙ্ক নিফ্টিতে বুধবার ইত্যাদি। সূত্রের খবর, একটি এক্সচেঞ্জে একটি সপ্তাহে একটিমাত্র সেটেলমেন্টের নিয়ম চালু করতে চলেছে সেবি।
সেবির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন বাজার বিশেষজ্ঞেরা। বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী বলেন, ফিউচার এবং অপশনের মতো চূড়ান্ত ঝুঁকিপূর্ণ আগাম লেনদেনে সাধারণ লগ্নিকারীর ব্যাপক অংশগ্রহণ চিন্তার বিষয়। শেয়ার বাজারের তথ্য, এই লেনদেনে ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জনই লোকসান করেছেন। অধিকাংশের বয়স ৩০ বছরের মধ্যে। সেবির পদক্ষেপে তাঁদের পুঁজি মূলধন সৃষ্টিকারী শেয়ারে আসার রাস্তা প্রশস্ত হবে।