মামা মেহুল চোকসি ও ভাগ্নে নীরব মোদী।
একই কারসাজিতে প্রতারণার অভিযোগে মামা-ভাগ্নে।
ভাগ্নে নীরব মোদী যদি ইউপিএ সরকারের আমলে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের চোখে ধুলো দিয়ে থাকেন, তা হলে মোদী জমানায় সেই একই ব্যাঙ্কের একই শাখায়, একই কায়দায় প্রতারণা করে দেখালেন তাঁর মামা মেহুল চোকসি। আর, তার জের বৃহস্পতিবার পড়ল শেয়ার বাজারেও।
মামার সংস্থা গীতাঞ্জলি জেমসের দর এ দিন এক ধাক্কায় ২০% পড়ল। ফের ১২% পড়েছে পিএনবি শেয়ারের দাম। গত দু’দিনের লেনদেনেই ব্যাঙ্কের দর নেমেছে ২২ শতাংশেরও বেশি। চোকসি ও গীতাঞ্জলির উপর নজরদারি শুরু করেছে সেবি।
আরও পড়ুন: নোটবন্দিকে কাজে লাগিয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন নীরব মোদী!
ঘটনার সূত্রপাত ২০১১ সালে। মুম্বইয়ে পিএনবি-র ব্র্যাডি হাউস শাখা থেকে বিধি ভেঙে হংকং থেকে হিরে কিনতে বিরাট অঙ্কের ঋণের গ্যারান্টি হাতিয়ে নেন নীরব ও তাঁর সংস্থা ফায়ারস্টার ডায়মন্ড। গত ১৬ জানুয়ারি নীরব, তাঁর মামা মেহুল চোকসি ও অন্য আত্মীয়দের বিভিন্ন সংস্থা পিএনবি-র কাছে ফের একই ধরনের গ্যারান্টির দ্বারস্থ হয়। তখনই সামনে আসে এই কেলেঙ্কারি।
যুগলবন্দি
• ইউপিএ জমানায় পিএনবি-তে ব্যাঙ্ককে প্রতারণা শুরু ভাগ্নে নীরব মোদীর
• নরেন্দ্র মোদীর আমলে ২০১৭ সালে একই ব্যাঙ্ক থেকে ‘টাকা হাতানোয়’ তৎপর মামা মেহুল চোকসি
• অর্থ প্রতিমন্ত্রী শিবপ্রতাপ শুক্লের প্রশ্ন, কেলেঙ্কারি শুরু ২০১১-এ। কংগ্রেস তখন কী করছিল?
• বিরোধীদের প্রশ্ন, নরেন্দ্র মোদীর মুখে কুলুপ কেন?
আজ পিএনবির এমডি ও সিইও সুনীল মেটা মেনে নিয়েছেন, ‘‘নীরব-মেহুলের বিভিন্ন সংস্থা জানুয়ারিতে ফের ঋণের গ্যারান্টি পেতে ব্যাঙ্কটির দ্বারস্থ না হলে প্রতারণা ধরাই পড়ত না। তবে ব্যাঙ্কই সে তথ্য উদ্ধার করেছে।’’ পিএনবি কর্তারা ৩০টি ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তাদের চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন, মেহুলের গীতাঞ্জলি জেমস, গিলি ইন্ডিয়া ও নক্ষত্র সংস্থা ‘ফরেন লেটার অফ ক্রেডিট’ হাতিয়েছিল। পরে বেআইনি ভাবে যা বাড়ানো হয়।
অর্থ মন্ত্রকের কর্তারাও মানছেন, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক, এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্কের পরিচালন ব্যবস্থায়ও গলদ আছে। প্রতারণার শিকার এই সব ব্যাঙ্কে ফরেনসিক অডিটের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্ক পরিষেবা সচিব রাজীব কুমার বলেন, ‘‘এটা ব্যবস্থার গাফিলতি। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’