মাধবী পুরী বুচ। —ফাইল চিত্র।
শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-র কর্ণধার মাধবী পুরী বুচকে টাকা দেওয়া নিয়ে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের করা দাবি ওড়াল কংগ্রেস। মঙ্গলবার বিরোধী দলের প্রশ্ন, যদি ব্যাঙ্কটি তাঁকে অবসরকালীন সুবিধাই দিয়ে থাকে, তা হলে কেন তার অঙ্ক বেতনের চেয়ে বেশি? কেনই বা টাকা দেওয়ার সময় নির্দিষ্ট নয়? একই প্রশ্ন করে তোপ দেগেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। সেই সঙ্গে বলেছেন, মাধবী সেবি-তে থাকার সময়ে আইসিআইসিআই-কে নিয়ে কোনও বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন কি না, তা জানানো হোক। আইসিআইসিআই-এর সংযুক্তিতে সায় দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন নিয়ম ভেঙে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তুলেছেন সেই প্রশ্নও।
কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, ২০১৭ সালে সেবি-র পূর্ণ সময়ের সদস্য ও তার চেয়ারপার্সন হলেও বুচ আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের থেকে বেতন ও অন্যান্য খাতে ১৬.৮ কোটি টাকা পান। একে ‘স্বার্থের সংঘাত’ বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যা চেয়েছে তারা। আইসিআইসিআই-এর দাবি, তাদের ব্যাঙ্ক বা গোষ্ঠীর অন্য কোনও সংস্থা মাধবীকে ২০১৩ সালে তাঁর অবসরের পরে বেতন দেয়নি। সংস্থার শেয়ারের মালিক হিসেবে তাঁর যা আয় হয়েছিল, সেই আয়ের টাকা ও অবসরকালীন সুবিধা হিসেবে প্রাপ্য অর্থই দেওয়া হয়েছিল।
এ দিন কংগ্রেসের জনসংযোগ দফতরের প্রধান পবন খেরা সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন, ব্যাঙ্কের উত্তর আদতে আরও বহু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘যদি মেনেও নেওয়া হয় যে অবসরের পরে ২০১৪-১৫ সালে আইসিআইসিআই থেকে মাধবী ৫.০৩ কোটি টাকা পেয়েছিলেন এবং ২০১৫-১৬ সালে কিছু পাননি, তা হলে সেই অবসরকালীন সুবিধা ফের ২০১৬-১৭ সালে চালু হয়ে ২০২১ পর্যন্ত চলে কী করে?’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘মাধবী ২০০৭ থেকে ২০১৩-১৪ পর্যন্ত গড়ে বছরে ১.৩ কোটি টাকা বেতন পেতেন। কিন্তু ২০১৬-১৭ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত অবসরকালীন সুবিধা বছরে গড়ে ২.৭৭ কোটি। কী করে বেতনের থেকে অবসরের সুবিধা বেশি হয়?’’
এ ছাড়াও কর্মী হিসেবে পাওয়া শেয়ার ১০ বছর ধরে ভাঙানোর নিয়ম কোথায় লেখা আছে এবং কেন তা সকলের সামনে আনা হয়নি বলেও জানতে চেয়েছেন কংগ্রেস নেতা। মাধবীকে কর্মীদের জন্য বরাদ্দ করা অংশীদারি থেকে শেয়ার দেওয়া হয়ে থাকলে, তাতে বাকিদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন খেরা। তিনি বলেন, কেন পুরীর হয়ে কর্মী-শেয়ারে উৎসে কর (টিডিএস) দিয়েছিল আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক? বাকি কর্মীদের ক্ষেত্রেও কি সেই সুবিধা দেওয়া হয়? পাশাপাশি, কেন টিডিএসের টাকা মাধবীর আয় হিসেবে দেখানো হয়নি, এবং এতে আয়করের বিধি ভাঙা হয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছেন কংগ্রেস নেতা।