প্রতীকী চিত্র।
দিন দিন ব্যাঙ্ক জালিয়াতি বাড়ছে। ফোনে তথ্য হাতিয়ে নিয়ে জালিয়াতরা মুহূর্তে খালি করে দিচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশে ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধির ফলে। সরকার ও প্রশাসন অনেক চেষ্টা করলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না জালিয়াত চক্র। বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতি দিনই বহু মানুষের বোকা বনে যাওয়ার অভিযোগ জমা পড়ছে। এমনই এক পরিস্থিতিতে একটি বিমা প্রকল্প নিয়ে এল এসবিআই জেনারেল ইনসিওরেন্স। যে কোনও ব্যাঙ্কের গ্রাহকই এই বিমার সুযোগ নিতে পারবেন। সংস্থার দাবি, এর ফলে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা নিয়ে সাইবার জালিয়াতির ঝুঁকি কমবে।
আগে থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার ডিজিটাল লেনদেনের উপরে জোর দিয়েছিল। এর পরে করোনা অতিমারি মানুষকে আরও বেশি করে ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ত করে তুলেছে। এর ফলে যেমন অনেক সুবিধা মিলেছে তেমনই সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিও বেড়েছে। আইসিইআরটি-ইন (ইন্ডিয়ান কম্পিউটার এমারজেন্সি রেসপন্স টিম)-এর দাবি অনুযায়ী সাইবার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় ২০১৮ সালেও ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২.০৮ লাখ টাকা। সেটাই ২০২১ সালে হয়ে গিয়েছে ১৪.০২ লাখ টাকা। আর ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড এবং ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে দেশে নথিবদ্ধ জালিয়াতির পরিমাণ ৬৩.৪ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে সংগ্রহ করা এই তথ্যই বুঝিয়ে দিচ্ছে কত বড় বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাইবার জালিয়াতি।
এসবিআই জেনারেল ‘সাইবার ভল্টএজ’ নামে যে বিমা প্রকল্প এনেছে তাতে অনেক নিরাপত্তা ও সুবিধার কথা জানিয়েছে। ডিজিটাল লেনদেন সংক্রান্ত কোনও বিপদ হলে যেমন ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে তেমনই অবৈধ ই-লেনদেনের ক্ষেত্রেও রক্ষাকবচের কাজ করবে। এ ছাড়াও সাইবার অপরাধের অন্যান্য দিক যেমন তথ্য চুরি, নেটমাধ্যমে সম্মানহানী, ট্রোলিং, বুলিং, স্টকিং-এর মতো সমস্যাতে কাজে লাগবে এই নতুন বিমা প্রকল্প।
এই প্রকল্প প্রসঙ্গে এসবিআই জেনারেলের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনন্দ পেজাওয়ার বলেন, ‘‘ইন্টারনেট যেমন জীবনে অনেক সুবিধা করে দিয়েছে, তেমনই অনেক ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। এই প্রকল্প সেই ঝুঁকি এবং ক্ষতি কমিয়ে দেবে।’’ কারও কোনও ক্ষতি হলে আইনি সাহায্য বা আইটি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ দরকার হলে সেটাও সংস্থার পক্ষ থেকেই ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছে এসবিআই জেনারেল। এমনকি আর্থিক ক্ষতির জন্য কেউ হতাশা বা অবসাদে ভুগলে চিকিৎসার খরচও পাওয়া যাবে বিমা থেকেই।
সাইবার সংক্রান্ত ঝুঁকি রয়েছে এমন যে কোনও ব্যাক্তি নিজের এবং পরিবারের জন্য এই বিমা নিতে পারবেন। পরিবারের ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রী এবং দুই নাবালক সন্তানকে ধরা হবে।