—প্রতীকী চিত্র।
ব্যবসায়িক উদ্যোগের নিরিখে রাজ্যকে ফের তার পুরনো গৌরব ফিরে পেতে হলে ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা গড়ে তোলা জরুরি বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল। রবিবার কলকাতায় বেঙ্গল বিজ়নেস কাউন্সিল (বিবিসি) আয়োজিত বাণিজ্য বিষয়ক এক আলোচনা সভায় যোগ দিতে এসে তিনি বলেন, এক সময়ে শিল্প ও ব্যবসার দিক দিয়ে দেশের প্রথম সারির রাজ্যগুলির একটি ছিল পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু নানা কারণে ক্রমশ বাংলা শিল্প ও ব্যবসার দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়েছে। আর্থিক দিক দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হলে সব থেকে আগে দরকার ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি।
বিবিসি-র চেয়ারম্যান অভিষেক আঢ্যের দাবি, রাজ্যে উদ্যোগপতি গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই ২০২১ সালে এই পরিষদ তৈরি হয়। তিনি বলেন, ‘‘শিল্প ও ব্যবসা শুরু করতে চান, এমন নতুন উদ্যোগপতিদের পাশে দাঁড়াতে চাই আমরা। কী ভাবে নতুন ব্যবসা শুরু করতে হয়, সে ব্যাপারে পরামর্শ তো দেওয়াই হয়। সেই সঙ্গে যাঁরা ইতিমধ্যেই তা শুরু করেছেন, তাঁদের ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বরাত সংগ্রহ, বিপণন-সহ বিভিন্ন ব্যাপারে সাহায্য এবং পরামর্শও দিয়ে থাকি।’’
এ দিন সভায় উপস্থিত বন্ধন ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা এবং এমডি চন্দ্রশেখর ঘোষ বলেন, ‘‘অর্থনৈতিক ভাবে উন্নতি করতে পারলে তবেই শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও উন্নতি করা সহজ হয়। আর্থিক ভাবে উন্নতি করার ক্ষেত্রে ব্যবসার বড় ভূমিকা রয়েছে।’’ ক্ষুদ্র ঋণের অতি ছোট ব্যবসা থেকে কী ভাবে তিনি একটি পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক তৈরিতে সফল হয়েছেন, তার ইতিহাসও এ দিন সকলকে জানান চন্দ্রশেখর।
ব্যবসার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গর গৌরব তুলে ধরতে গিয়ে সঞ্জীব এ দিন রামমোহন রায়, দ্বারকানাথ ঠাকুর, রানী রাসমণি, মোহিনী মিলের প্রতিষ্ঠাতা মোহিনী মোহন চক্রবর্তীর মতো ব্যক্তিদের উদাহরণ দেন। ব্যবসায়িক সাফল্যের নজির হিসাবে উল্লেখ করেন ক্যালকাটা কেমিকালস, লক্ষ্মী টি, পেন তৈরির কারখানার প্রতিষ্ঠাতা রাধানাথ সাহার কথাও। এক সময়ে ইস্পাত, কয়লা খনি, বস্ত্র, চা ইত্যাদির ব্যবসায় এই রাজ্যের এগিয়ে থাকার কথাও বলেন। তবে সঞ্জীবের অভিযোগ, পরে নানা কারণে শিল্পে পিছিয়ে পড়েছে রাজ্য। যার অন্যতম ট্রেড ইউনিয়নগুলির বিক্ষোভ-আন্দোলন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাঙালি ব্যবসা করতে পারে না বলে যে দুর্নাম আছে, তা অবিলম্বে ঘোচানো জরুরি। আত্মনির্ভর ভারতের স্লোগান শুধু আমদানি কমানোর বিকল্প ব্যবস্থা তৈরির জন্য নয়। এর উদ্দেশ্য, দেশে উচ্চ মানের পণ্য তৈরিও।’’