প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল। প্রতীকী ছবি।
মোদী সরকারের লাগাতার সংস্কারে ভারতের জোগান ব্যবস্থা আর্থিক বৃদ্ধির হারকে ৮ শতাংশের উপরে তুলে দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করেছে বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল। তবে বাস্তবে চলতি অর্থবর্ষের বৃদ্ধি প্রায় ৬.৫% হবে বলেই মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, গোটা বিশ্বে দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি হওয়ার শিরোপাও থাকবে ভারতের মাথায়।
সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি) জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারের কঠিন পরিস্থিতি এবং চাহিদা শ্লথ হওয়ার দরুন এ বছর ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস সামান্য কমিয়েছে তারা। তা এখন ৬.৩% এবং ৬.৪ শতাংশের মধ্যে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। পূর্বাভাস ছেঁটেছে আইএমএফও। ৬.১% থেকে কমিয়ে করেছে ৫.৯%। তবে রবিবার এক সাক্ষাৎকারে সান্যাল বলেন, ‘‘এডিবি এবং বিশ্ব ব্যাঙ্ক বৃদ্ধির পূর্বাভাস সামান্য কমানোর পরেও ভারত বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি থাকবে। এটা বলা ভুল যে, আমরা পিছিয়ে পড়ছি। এ বছরের শুরুর দিকে আর্থিক সমীক্ষায় যা বলা হয়েছিল আমি তার সঙ্গে একমত। সাড়ে ছয় শতাংশের আশেপাশে থাকবে বৃদ্ধি, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে যথেষ্ট ভাল।’’ সেই সঙ্গে তিনি এটাও বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি যে রকম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে চলেছে, তাতে অন্য যে কোনও অর্থনীতির থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে এ দেশ।
তবে ৮-৯ শতাংশ বৃদ্ধির হার অর্জন করতে গেলে ভারতকে কী করতে হবে, এই প্রশ্নের উত্তরে সঞ্জীবের দাবি, সেই ক্ষমতা ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে জোগান ব্যবস্থার নিরিখে। যদিও বিশ্বের বাকি অংশের অর্থনীতি যখন দ্রুত মন্থর হচ্ছে, তখন কেন্দ্রের পক্ষে ৬.৫০ শতাংশের স্তর থেকে বৃদ্ধিকে টেনে তোলা সম্ভব হবে না। কারণ ৮% বৃদ্ধির শ্রেণিতে থাকা মানে আমদানি বেড়ে যাওয়া। অথচ বিশ্ব বাজারে চাহিদা ঝিমিয়ে থাকায় রফতানি বাড়ানো কঠিন। ফলে অর্থনীতির স্থিতিশীলতার নিরিখে ভারতকে নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে প্রত্যাশাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
আমেরিকা, ইউরোপের ব্যাঙ্কিং শিল্পের সমস্যা ভারতে সরাসরি প্রভাব ফেলবে না বলেও আশ্বাস দেন সঞ্জীব। তাঁর মতে, এ দেশে ব্যাঙ্কগুলিকে পরিষ্কার করে অনুৎপাদক সম্পদ সরানোর কাজ সরকার অনেক আগেই সেরেছে। যেখানে তাদের অস্ত্র ছিল মূলধনের জোগান এবং দেউলিয়া আইনে ঋণ শোধে অপারগ সংস্থার ঋণদাতাদের বকেয়া ফেরতের ব্যবস্থা।