—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এক দিকে দামি বিলাসবহুল আবাসনের বিক্রি অভূতপূর্ব গতিতে বাড়ছে। অন্য দিকে চমকে দেওয়ার মতো বেগে কমছে তুলনায় কম দামি সাধ্যের আবাসন (অ্যাফর্ডেবল) কেনার ঝোঁক। এ দেশে দ্রুত ফ্ল্যাট-বাড়ির বাজারকে বদলে যেতে দেখছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।
আবাসন উপদেষ্টা নাইট ফ্রাঙ্কের হিসাব, ২০২২-এর থেকে ২০২৪-এ সাধ্যের আবাসন (৫০ লক্ষ টাকার নীচে) বিক্রি কমেছে প্রায় ৩৪.৫%। তবে বিলাসবহুলগুলির (এক কোটি টাকার বেশি) বেড়েছে প্রায় ১২৪%। ২০২২-এর জানুয়ারি-মার্চে দামি ফ্ল্যাট বিকিয়েছিল ১৮,০০০টি, গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে হয়েছে ৪০,৪০০। সাধ্যেরগুলি ৩২,০৩৪ থেকে নেমেছে ২০,৮০০টিতে। মার্কিন উপদেষ্টা সংস্থা সিবিআরই জানিয়েছে, কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই-সহ সাত বড় শহরে গত জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরে ৪ কোটি টাকার বেশি দামি আবাসন বিক্রি বেড়েছে ৩৮%। বিক্রি হয়েছে এমন ১২,৬৩০টি, যা গত বছর ছিল ৯১৬৫। উপদেষ্টা প্রপটাইগারের দাবি, জুলাই-সেপ্টেম্বরে আবাসন বিক্রি কমেছে ৫%, সিংহভাগই সাধ্যের।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এর জন্য দায়ী কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, আবাসনের অবস্থান, অতিরিক্ত স্বাচ্ছন্দ্য, নিরাপত্তা ইত্যাদি। মার্লিন গোষ্ঠীর এমডি সাকেত মোহতা বলেন, “কলকাতায় আগে সাধ্যের আবাসন বেশি বিক্রি হত। গত ন’মাসে বিলাসবহুলগুলির বিক্রি কয়েকগুণ বেড়েছে।” নাইট ফ্রাঙ্কের সিনিয়র ডিরেক্টর (পূর্বাঞ্চল) অভিজিৎ দাসের দাবি, “ভাল অবস্থান এবং একাধিক সুবিধা পেতে অনেকে বরাদ্দ বাড়াচ্ছেন। আর এখন ৭০-৮০ লক্ষের নীচে ভাল ফ্ল্যাট মেলা দুষ্কর। বছর দুয়েক আগে রাজারহাটে যেগুলির বর্গফুট ছিল ৫০০০-৬০০০ টাকা, সেগুলিই এখন প্রায় ৯৫০০- ১০০০০ টাকা।’’ তবে জৈন গোষ্ঠীর এমডি ঋষি জৈন বলেন, ‘‘কলকাতায় এখনও কম দামি বিকোয় বেশি। মানুষের জায়গার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বড় এবং অবস্থানগত সুবিধাযুক্তগুলি গুরুত্ব পাচ্ছে। আগে ১০টির মধ্যে ৩টি বিলাসবহুল বিকোত, এখন ৪টি বা তার বেশি হয়। তবে অতি দামিগুলির বিক্রি ক’বছরে কয়েকগুণ বেড়েছে।” উদ্বিগ্ন ইডেন রিয়েলটির এমডি আর্য সুমন্ত। বলছেন, “সাধ্যের আবাসন তৈরির জন্য কর ছাড়-সহ সব সুবিধা তুলে নিয়েছে সরকার। তাই এগুলির চাহিদা থাকলেও নির্মাণ কমছে।’’