বেতনের ঊর্ধ্বসীমা বাড়তে চলেছে। —প্রতীকী চিত্র।
কর্মী রাজ্য বিমা প্রকল্পে (এমপ্লয়িজ় স্টেট ইনশিয়োরেন্স বা ইএসআই) যোগ দেওয়ার জন্য বেতনের ঊর্ধ্বসীমা বাড়তে চলেছে। প্রকল্পের আওতায় আরও বেশি মানুষকে শামিল করাই যার লক্ষ্য। সংশ্লিষ্ট কর্তার দাবি, সিদ্ধান্ত পাকা হতে পারে চলতি অর্থবর্ষেই। বর্তমানে মাসে ২১,০০০ টাকা পর্যন্ত বেতন পাচ্ছেন, এমন কর্মীরাই শুধুমাত্র ইএসআই-এর সদস্য হতে পারেন। খবর, তা বেড়ে হতে পারে ৩০,০০০ টাকা।
ইএসআই হল সাধারণ কর্মীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প। এর আওতায় তাঁরা বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং বিমার সুবিধা পান। কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনার কারণে যদি স্থায়ী ভাবে কারও কোনও অঙ্গহানি হয় অথবা শারীরিক ভাবে ক্ষতির ফলে যদি তাঁর কর্মক্ষমতা চলে যায়, তা হলে তাঁকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও ব্যবস্থা আছে। নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে কর্মী মারা গেলে, তাঁর পরিবার ইএসআই প্রকল্পের মাধ্যমে পেনশন পেয়ে থাকেন। এই প্রকল্পের জন্য প্রতি মাসে সদস্য-কর্মীদের থেকে বেতনের ০.৭৫% টাকা কেটে নেওয়া হয়। নিয়োগকারী দেন বেতনের ৩.৭৫% টাকা।
সম্প্রতি বণিকসভা মার্চেন্ট চেম্বার আয়োজিত এক আলোচনা সভায় পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে সংস্থার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত কমিশনার এবং আঞ্চলিক কর্তা অমরিশ কুমার শর্মা জানান, ইএসআই-এ যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেতনের বর্তমান ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো নিয়ে ভাবনাচিন্তা হচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে চলতি অর্থবর্ষেই তা বেড়ে ৩০,০০০ টাকা হতে পারে।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি। ইএসআই-এর পরিচালন পর্ষদের সদস্য এবং টিইউসিসির সাধারণ সম্পাদক এস পি তিওয়ারি বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে এই দাবি জানাচ্ছিলাম। অবশেষে সরকার তা মেনে নিচ্ছে জেনে আমরা খুশি। এতে আরও বহু মানুষ ওই সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। শুনেছি আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায় রয়েছে। সিদ্ধান্ত পাকা হলে কোনও কর্মীর ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত বেতন হলেও ইএসআইয়ের সমস্ত সুবিধা নিতে পারবেন।’’ তবে এআইইউটিইউসির অন্যতম নেতা দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, “সব কিছুর খরচ যখন বেড়ে গিয়েছে, তখন সাধারণ বা স্বল্প বেতনের সব কর্মীকে সুরক্ষিত রাখা কর্তব্য কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের। যে কারণে আমরা দীর্ঘ দিন ধরে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রেও কর্মীদের বেতনের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কেন্দ্র তা কানে তুলেছে না। সেটা করা হলে আরও অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ উপকৃত হবেন।’’
দিলীপ জানান, কোনও সংস্থায় ১০ জন কর্মী থাকলেই ইএসআইতে বেতনের ঊর্ধ্বসীমা অনুযায়ী তাঁদের নাম তোলা বাধ্যতামূলক। চিকিৎসার খরচ যেখানে পৌঁছেছে, তাতে বিমার সুবিধা সাধারণ আয়ের সব মানুষের কাছেই পৌঁছনো জরুরি। ইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষের মতে, “ইএসআই আইন সংশোধন করেই ওই সমাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে যোগদানের ক্ষেত্রে বেতনের সর্বোচ্চ সীমা বাড়ানো হবে। আশা করছি, এর সঙ্গে কর্মী পিএফেরও সামঞ্জস্য রাখার ব্যবস্থা করবে কেন্দ্রীয় সরকার।’’