ফাইল চিত্র।
করোনা থেকে যখন বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, তখনই যুদ্ধ লেগেছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। যার জেরে বাড়তে শুরু করেছে অশোধিত তেল-সহ বিভিন্ন পণ্যের দর। প্রভাব পড়ছে মানুষের জীবনে। এই পরিস্থিতি বিশ্ব অর্থনীতির পক্ষে ‘ধ্বংসাত্মক’ হতে পারে বলে মনে করে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। একই আশঙ্কার কথা জানিয়ে শুক্রবার চলতি ২০২২ সালে ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ১০ বেসিস পয়েন্ট কমাল লন্ডনের তথ্য বিশ্লেষণ সংস্থা গ্লোবালডেটা। জানিয়েছে, এ বছরে তা দাঁড়াতে পারে ৭.৮ শতাংশে।
আজ এক সাক্ষাৎকারে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস বলেন, বিশেষত গরীব দেশগুলিতে এই যুদ্ধের ধাক্কা লাগবে বেশি। সেখানকার মানুষ ইতিমধ্যেই অতিমারি ও চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে জর্জরিত। তার উপরে বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনে বিশ্বের প্রায় ২৯% গম উৎপাদন হয়। সূর্যমুখী তেলের ৬০ শতাংশই আসে এখান থেকে। ফলে এই ধরনের পণ্যের উৎপাদন কমার জেরে সেগুলির দাম বাড়বে। তার উপরে ইউরোপের জ্বালানি চাহিদার অধিকাংশটা মেটায় রাশিয়া। সে দিক থেকেও তার দাম বাড়তে পারে আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই বিশ্ব বাজারে যা ১২০ ডলারের কাছে পৌঁছেছে।
এ দিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে ভারতের বাণিজ্যে পড়বে, সে কথা অনেকেই বলছেন। গ্লোবালডেটারও মতে, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক মুক্তো ও দামি পাথর, সার, পেট্রপণ্য ও অশোধিত তেল, ভোজ্য তেলের মতো পণ্য যেগুলি ওই দুই দেশ থেকে আনে ভারত, সেগুলির দাম আগামী দিনে বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
সংস্থাটির আর্থিক গবেষণা সংক্রান্ত বিশ্লেষক গার্গী রাওয়ের মতে, পরিবহণে সমস্যার কারণে স্বল্প মেয়াদে তেল ও গ্যাসের চড়া দামের ধাক্কা লাগতে পারে। বিশেষত, পণ্যের দাম বাড়লে চড়বে চলতি খাতে ঘাটতি, প্রভাব পড়বে লগ্নির পরিবেশে, কমতে পারে শেয়ার বাজার। সব মিলিয়ে মুদ্রার বিনিময় মূল্যও নামার সম্ভাবনা।
তবে এর মধ্যেই ওই দুই দেশ বাদে বিশ্বের অন্য প্রান্তে ভারতের রফতানি বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। সেই সঙ্গে বলেছে ভবিষ্যতে সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনাও রয়েছে। প্রশংসা করেছে ভারতের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রেরও।