ফাইল চিত্র।
ইন্ডিয়ান অয়েলের (আইওসি) পরে দেশের আরও দুই রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় অশোধিত তেল কিনছে। তবে বিশ্বের বৃহত্তম শোধনাগার যাদের, সেই রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ় কম দামের সুবিধা সত্ত্বেও ভ্লাদিমির পুতিনের দেশকে এড়িয়ে চলার ইঙ্গিত দিয়েছে। যার কারণ, ইউক্রেন আক্রমণের জন্য মস্কোর উপরে চাপা পশ্চিমী দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞা।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম লাফিয়ে বেড়েছে। ফলে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কার প্রহর গুনছে গোটা দেশ। যে আশঙ্কা হালে আরও বাড়িয়েছে বিমান জ্বালানি এটিএফের লক্ষ টাকা ছাড়ানোর নজির। এমন অবস্থায় আমেরিকা, ইউরোপের আর্থিক নিষেধাজ্ঞার (যার মধ্যে আছে তাদের থেকে তেল কেনাও) মুখে পড়ে ভারতের মতো তেল আমদানিকারী দেশকে সস্তায় জ্বালানি বিক্রির সুবিধা দিচ্ছে রাশিয়া। তার উপরে আমেরিকা বলেছে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনলে সেটা তাদের নিষেধাজ্ঞার শর্ত লঙ্ঘন করা হবে না। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার তেলের জন্য ঝাঁপিয়েছে এ দেশের সংস্থাগুলি।
২০২০ সাল থেকে সেখানকার রজ়নেফ্টের সঙ্গে নির্দিষ্ট পরিমাণে তেল কিনতে চুক্তিবদ্ধ হলেও, পরিবহণ খরচের দরুন তা আর্থিক ভাবে লাভজনক না হওয়ায় আইওসি বাস্তবে কেনে নামমাত্র। কিন্তু সূত্রের খবর, ব্যারেল প্রতি ২০-২৫ ডলার কম দামে পেয়ে গত সপ্তাহে তারা ৩০ লক্ষ ব্যারেল তেল কিনেছে। সূত্রের খবর, এ বার হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামও (এইচপিসি) কিনেছে ২০ লক্ষ ব্যারেল। অন্য দিকে, আর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ওএনজিসি-র শাখা ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস রাশিয়া থেকে ১০ লক্ষ ব্যারেল তেল কেনার জন্য ইতিমধ্যেই দরপত্র চেয়েছে।
ফলে এত দিন ভারতে আমদানি হওয়া অশোধিত তেলের মাত্র ১% রাশিয়ে থেকে আনলেও, এ বার তা বাড়তে পারে।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে রাশিয়ার উপরে আমেরিকা ও ইউরোপের নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জেরে গোড়ায় ওই এক শতাংশ আমদানি নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছিল।
তবে এশিয়া রিফাইনিং অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল সম্মেলনে রিলায়্যান্সের অন্যতম শীর্ষ কর্তা রাজেশ রাওয়াত জানান, তাঁরাও রাশিয়া থেকে তেল কিনতে পারেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার জন্যই হয়তো সেটা করবেন না। প্রসঙ্গত, রিলায়্যান্স পশ্চিম এশিয়া এবং আমেরিকা থেকেই মূলত অশোধিত তেল কেনে।
সম্প্রতি ভারতের তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী আশ্বাস দেন, দু’বছরের অতিমারি এবং তারপরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে সব রকম পথ খতিয়ে দেখা হবে। সেই সূত্রে রাশিয়ার সস্তায় তেল বিক্রির প্রস্তাব খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি। এ নিয়ে সে দেশের সরকারি কর্তাদের সঙ্গেও তাঁর আলোচনা হয়।