ইউক্রেন-সঙ্কটের আবহে সমস্যায় চা শিল্প। প্রতীকী ছবি
অতিমারির ধাক্কা এখনও কাটেনি। এ বার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহ নতুন উদ্বেগ তৈরি করল দেশের চা শিল্প মহলে। কারণ, ভারতের চা রফতানির বড় বাজার রাশিয়া। আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশ মস্কোর উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপালে সেই রফতানি ব্যবসার ভবিষ্যৎ কী হবে, সে ব্যাপারে সংশয়ে সংশ্লিষ্ট মহল।
জানুয়ারি-নভেম্বরের হিসাবে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ভারতের চায়ের রফতানি পিছিয়ে। একে ফের আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার মরিয়া লড়াইয়ের মধ্যেই বদলে গিয়েছে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এর প্রভাব প্রাথমিক ভাবে চায়ের রফতানিতে কতটা পড়বে, তা নিয়ে বলার সময় আসেনি বলে দাবি করলেও, চা শিল্পমহল তাদের উদ্বেগও চেপে রাখেনি। রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে পরিস্থিতি ঘোরালো হবে বলেই আশঙ্কা তাদের। চা শিল্পের বক্তব্য, অতিমারির আবহে ফের বিশ্ব জুড়ে অস্থিরতা বাড়লে চায়ের সার্বিক রফতানিই ধাক্কা খাবে। উল্টে দেশের বাজারে চায়ের জোগান বাড়লে তার দাম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন ঘরে-বাইরে দু’জায়গার ব্যবসাতেই আয়ে কোপ পড়ার আশঙ্কা।
রাশিয়া-সহ সিআইএস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিতেই ভারতীয় চা সবচেয়ে বেশি যায়। টি বোর্ড এবং চা শিল্প সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে ইরানকে দ্বিতীয় স্থানে ঠেলে রফতানির গন্তব্যে শীর্ষে উঠে এসেছে রাশিয়া। ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপার্সন নয়নতারা পালচৌধুরি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘ইরানে রফতানির ক্ষেত্রে পাওনা নিয়ে সমস্যার জন্য রাশিয়ার বাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চা রফতানির প্রায় ১৮ শতাংশের গন্তব্য রাশিয়া। ইউক্রেনে অবশ্য তার পরিমাণ কম।’’
যুদ্ধে সাধারণ মানুষের সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে ইন্ডিয়ান টি এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অংশুমান কানোরিয়ার দাবি, সদ্য এই ঘটনার প্রভাব নিয়ে এখনই বলার সময় আসেনি। তবে এই উত্তেজনা দীর্ঘমেয়াদি হলে চা রফতানিতে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। গত কয়েক দিনে ডলারের সাপেক্ষে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের পতন চিন্তা বাড়িয়েছে তাঁদের। সে ক্ষেত্রে রাশিয়ায় ভারতীয় চায়ের দামও পড়তে পারে। তা হলে ভারতীয় রফতানিকারীর আয় ধাক্কা খাবে।
নয়নতারা এবং অংশুমান উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তেলের দাম নিয়েও। অংশুমানের আশঙ্কা, তেলের দাম বাড়লে পরিবহণ খরচ আরও বাড়বে। পাশাপাশি রফতানির জন্য জাহাজের জোগান নিয়েও সংশয়ী তাঁরা।