গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ফের পড়ল টাকার দাম। সোমবার দিনের শুরুতেই ডলারে প্রতি টাকার দাম ৪২ পয়সা কমে দাঁড়ায় ৭২.০৮। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই নিম্নমুখী প্রবণতাও বজায় থাকে। শেয়ার বাজারের কারবার শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই টাকার দামে আরও পতন ঘটে। ৫৯ পয়সা কমে গিয়ে এক সময় ১ ডলারের দাম হয় ৭২.২৫ টাকা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাঙ্ক-সহ আমদানিকারীদের কাছে ডলারের চাহিদা অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি, আমেরিকা ও চিনের শুল্ক-যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবও পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। তার ঢেউ লাগছে ভারতের বাজারেও। গত শুক্রবারই আমেরিকা ও চিন— দু’দেশই পরস্পরের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আবহেও সেই প্রবণতা যে অব্যাহত রাখবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, সেই ইঙ্গিতও মিলেছে তাঁর টুইট-মন্তব্যে। মার্কিন সংস্থাগুলিকে চিন ছাড়ার জন্য ইতিমধ্যে ‘নির্দেশ’ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, চিনা পণ্যে আরও শুল্ক চাপানোর জন্যও অনুতাপ করেছেন।
শুল্ক নিয়ে আমেরিকা ও চিনের এই বাণিজ্য-যুদ্ধের রেশ ছড়াচ্ছে এ দেশের বাজারেও। দেশীয় সংস্থাগুলি তার জেরে ধাক্কা খাচ্ছে। একই সঙ্গে, চিনা মুদ্রার পতনের ফলেও ডলারের তুলনায় টাকার দামে নিম্নমুখী। গত ১১ বছরের মধ্যে ডলারের তুলনায় চিনা মুদ্রা ইউয়ানে সবচেয়ে বেশি পতন ঘটেছে। ১ ডলার ইউয়ানের দাম দাঁড়িয়েছে ৭.১৪৮৭। যা গত ২০০৮-এর পর থেকে এশীয় বাজারে সবচেয়ে কম।
আরও পড়ুন: আর কী দেবে কেন্দ্র, অপেক্ষায় বাজার
আরও পড়ুন: ফের ধাক্কা চিদম্বরমের, জামিন নিয়ে হস্তক্ষেপে রাজি নয় সুপ্রিম কোর্ট
গত শুক্রবার বাজার বন্ধের সময় ডলার প্রতি টাকার দাম ছিল ৭১.৬৬। এ দিন বাজার শুরুর মধ্যেই তাতে আরও পতন ঘটে। তবে অনেকের মতে, দেশীয় সংস্থাগুলির ইক্যুয়িটির চাহিদা থাকায় টাকার পতনে আরও নিম্নমুখী প্রবণতায় দেখা দেয়নি। এ ছাড়া, বিশ্ব জুড়ে অপরিশোধিত তেলের দাম হ্রাস পাওয়ায় ডলারের তুলনায় টাকার দাম আরও নিম্নমুখী হয়নি। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের একগুচ্ছ দাওয়াই ঘোষণার মধ্যেই এই প্রবণতায় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগ বাড়ছে শেয়ার বাজারে। যদিও বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভারতের বাজারে এক শ্রেণির বিদেশি আর্থিক লগ্নিকারী সংস্থা (এফপিআই)-কে ফেরানোর প্রচেষ্টা থেকে শুরু করে দেশীয় শিল্পকে নগদ অর্থ জোগান দেওয়া, কম খরচে ঋণের ব্যবস্থা করা, সাধারণের ধারের কিস্তিতে ছাঁটাই করা বা গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধির মতো কেন্দ্রের একাধিক উদ্যোগে আশাবাদী দেশীয় বাজার। এতে ভারতের বাজারে বিদেশি আর্থিক লগ্নিকারীদের আনাগোনা বাড়বে, গাড়ি শিল্পের হাল ফিরবে এবং সর্বোপরি চাঙ্গা হবে দেশের অর্থনীতি— এমনটাই আশা শেয়ার বাজারের।