লকডাউনে বন্ধ দোকানবাজার। —ফাইল চিত্র
লকডাউনের জেরে গত বছরের চৈত্র সেল বা পয়লা বৈশাখে ব্যবসার ঝুলি ছিল শূন্য। এ বার সেই বাজারের হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করছিল এ রাজ্যের পোশাক, ভোগ্যপণ্য-সহ সার্বিক খুচরো ব্যবসা। লড়তে হচ্ছে সারা দেশের খুচরো ব্যবসাকেও। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ও মহারাষ্ট্র-সহ কিছু রাজ্যের কড়া পদক্ষেপে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে তারা। খুচরো ব্যবসার সংগঠন রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (আরএআই) বক্তব্য, অন্য অনেক ক্ষেত্র চালু থাকলেও কোপ পড়ছে তাদের উপরেই। তাই ফের সার্বিক নীতি তৈরির পক্ষে সওয়াল করার পাশাপাশি, আমজনতাকেও কড়া ভাবে করোনা বিধি মেনে চলার আর্জি জানিয়েছে তারা।
এমনিতে আর্থিক বৃদ্ধিকে পাখির চোখ করে সারা দেশে সামগ্রিক লকডাউনের সম্ভাবনা একাধিক বার খারিজ করেছে কেন্দ্র। তবে বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয় লকডাউন এবং বিক্ষিপ্ত বিধিনিষেধ বেড়েই চলেছে। শনিবার মহারাষ্ট্রে সর্বদল বৈঠকের পরে ইঙ্গিত, সে রাজ্যে বিধিনিষেধ আরও কড়া হতে পারে। ভোট মিটলে এ রাজ্যেও স্থানীয় কড়াকড়ি বাড়ার আশঙ্কা করছে বিভিন্ন মহল। এই অবস্থায় আরএআইয়ের সিইও কুমার রাজাগোপালনের দাবি, করোনা সংক্রমণ রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ঠিকই, কিন্তু বিক্ষিপ্ত বিধিনিষেধ শিল্প-বাণিজ্যের সঙ্কট আরও বাড়াবে। মুম্বই থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘শুধু মহারাষ্ট্রেই আগামী এক মাসে খুচরো ব্যবসার ক্ষেত্র ৩৫,০০০ কোটি টাকার বাজার হারাতে পারে। অথচ গণপরিবহণ, উৎপাদন শিল্প, সাধারণ বাজার, সব কিছুই খোলা। অন্যান্য রাজ্যে ক্রিকেট খেলা বা রাজনৈতিক প্রচারও বাদ নেই। আর কঠোর ভাবে করোনা বিধি মেনে শপিং মল-সহ খুচরো ব্যবসা চালু রাখা সম্ভব হলেও তাতে কোপ পড়ছে।’’ মাস্ক ব্যবহার না-করলে বিদেশের মতো কড়া জরিমানাও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সংক্রমণ দিনে এক লক্ষ ছাপিয়ে আরও মাথা তুলছে। রাজ্যেও তা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এখানে ব্যবসার ক্ষেত্রে এখনও তেমন বিধিনিষেধ না-থাকলেও বিভিন্ন রাজ্যের পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে সংশয়ী আরএআইয়ের পূর্বাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ-কর্তা পুলকিত বেদ। তিনি মনে করেন, যে কোনও রকম সাময়িক বা বিক্ষিপ্ত নিষেধাজ্ঞা চৈত্র সেলের হাত ধরে ব্যবসার চাকায় গতি আনার আশায় জল ঢালতে পারে। তা মাথায় রেখেই পদক্ষেপ করতে হবে প্রশাসনকে।